মহেশখালী ভ্রমণ-

মহেশখালী দ্বীপ (Maheshkhali Island) বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ।।এটা কক্সবাজার জেলার একটি দ্বীপগঠিত উপজেলা যা কক্সবাজার শহর থেকে মাত্র ১২ কিমি দূরে অবস্থিত। এই দ্বীপটির তিনদিকে বঙ্গোপসাগর এবং একদিক পাতা বাঁকখালী নদী দ্বারা বেষ্টিত। মহেশখালী উপজেলা-মাতারবাড়ি, সোনাদিয়া, ধলঘাটা ও মহেশখালী এ চারটি দ্বীপের সমন্বয়ে গঠিত।

এ দ্বীপের মৈনাক পর্বতের উপরে রয়েছে আদিনাথ মন্দির। এ দ্বীপের কারুকার্য এখানে আসা দর্শনার্থীদের আকৃষ্ট করে এছাড়াও বছরের ফাল্গুন মাসে এখানে আদিনাথ মেলা অনুষ্টিত হয়। এখানে রয়েছে বেশ কিছু বোদ্ধ বিহার, জলাবন ও নানা প্রজাতির পশুপাখি। মহেশখালীতে আছে আদিনাথ মন্দির, রাখাইন পাড়া ও স্বর্ণ মন্দির। চাইলে ঝাউবাগান ও চরপাড়া বীচ থেকে ঘুরে আসতে পারেন। চলতি পথেই দেখতে পাবেন পান গাছের বাগান আর লবণের মাঠ। মহেশখালীর পানের সুনাম সারা বাংলাদেশ ব্যাপী তাই এখানে এলে অবশ্যই মনে করে পান খাবেন।

আদিনাথ মন্দির

বাংলাদেশের একমাত্র পাহাড়ি দ্বীপ মহেশখালীতে হিন্দুদের তীর্থস্থান আদিনাথ মন্দিনের অবস্থান।পাহাড়ের চূড়ায় অবস্থিত এ মন্দির সারা বিশ্বের হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে একটি পবিত্র স্থান।।আদিনাথ মন্দির সমুদ্র স্তর থেকে ৮৫.৩ মিটার উচুঁ মৈনাক পাহাড় চূড়ায় অবস্থিত। বাংলাদেশের কক্সবাজার জেলার অন্তর্গত মহেশখালী উপজেলার স্বাধীন গোরখঘাটা ইউনিয়নের ঠাকুরতলা গ্রাম আদিনাথ মন্দির এর অবস্থান। এটি মূলত মহাদেব-এর মন্দির। জনশ্রুতি আছে, কোনো এক কৃষক এই দ্বীপের একটি বনের ভিতর মহেশ (হিন্দু পৌরাণিক দেবতা মহাদেব-এর অপর নাম)-এর মূর্তি পান। এরপর এই দেবতার নামে একটি মন্দির তৈরি করে, সেখানে ওই বিগ্রহটি স্থাপন করেন। পরে এই দেবতার নামের সাথে খালী (খাল অর্থে) শব্দ যুক্ত হয়ে-এই স্থানটি মহেশখালী নামে পরিচিত লাভ করে।

মহেশখালী
ছবিঃ মহেশখালী

কিভাবে যাবেনঃ

কক্সজবাজার শহরের যেকোন জায়গা থেকে মহেশখালী যাবার জেটিতে (৬ নং ঘাট) চলে আসুন। তারপর লোকাল ট্রলার বা স্পীড বোটে ৭০-৮০ টাকা ভাড়ায় মহেশখালি আসবেন। চাইলে স্পিডবোট রিজার্ভ নিতে পারবেন। মহেশখালি এসে সবকিছু ঘুরে দেখতে এক বা দুজন হলে একটা রিক্সা (ভাড়া ১৫০-১৭০ টাকা) অথবা ৫-৭ জন হলে অটো/ইজিবাইক ভাড়া (৩০০-৩৫০ টাকা) করে নিবেন।তবে ভালো করে দরদাম করে নিবেন, না হয় ভোগান্তিতে পরতে পারেন।

কোথায় থাকবেনঃ

অল্প দূরত্ব হওয়ায় মহেশখালী থেকে সহজেই ফিরে আসা যায়। এছাড়া মহেশখালীতে থাকার তেমন ব্যবস্থা নেই তাই রাত্রি যাপনের জন্য ফিরে আসুন কক্সবাজার।

কি খাবেনঃ

অল্প দূরত্ব হওয়ায় মহেশখালী থেকে সহজেই ফিরে আসা যায়। আর তাই সাময়িক ক্ষুদা নিবারণের জন্য দ্বীপেই হালকা খাবার খেয়ে নিতে পারেন।মহেশখালীতে কি কি খাবেন—-যেমনটা বলছিলাম, মহেশখালীর মিস্টি পান দেশখ্যাত। তাই কোনোভাবেই এই পানের স্বাদ নেওয়া মিস করা চলবে না। এছাড়া মহেশখালীর বিখ্যাত খাবারগুলোর হল- মিস্টি ডাব, শুটকি। মহেশখালীকে শুটকি উৎপাদনের রাজধানী বললে ভুল হবেনা কারন দেশের সিংহভাগ শুটকি এখানেই উৎপন্ন হয়। সারাদেশ থেকে একারনে ব্যাবসায়ীরা দ্বীপটিতে শুটকি কিনতে ভিড় জমায়। মহেশখালী গেলে তাই স্থানীয় রেস্টুরেন্টে ফ্রেশ শুটকি খেতে পারেন।

বি: দ্র : ঘুরতে গিয়ে দয়া করে পরিবেশ নষ্ট করবেন না,চিপস এর প্যাকেট, পানির বোতল এবং অপচনশীল দ্রব্য নির্ধারিত স্হানে ফেলুন।। এই পৃথিবী, এই দেশ আমার, আপনার সুতরাং নিজের দেশ এবং পৃথিবীকে সুন্দর রাখা এবং রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্বও আমার এবং আপনার।। হ্যাপি_ট্রাভেলিং

ভ্রমণ বিষয়ক তথ্য পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেইসবুক গ্রুপ এবং ফলো করুন আমাদের পেইজ