গোয়া ভ্রমণ-

গোয়া (Goa)ভারতের মধ্যে একটি ছোট্ট রাজ্য এই গোয়া, যা অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরা। নারকেল গাছের সারিযুক্ত সমুদ্র সৈকত, সমৃদ্ধ সাংস্কৃতিক ঐতিহ্য এবং অক্লান্ত উৎসবের মেজাজ সহ গোয়া ভ্রমণ সারা বিশ্ব জুড়ে পর্যটকদের আকর্ষণ করে। একদিকে সমুদ্রের নীরব হাতছানি, অন্যদিকে পাহাড়ের অপূর্ব শোভা উপভোগ করতে কয়েকটি দিন আপনাকে কাটিয়ে আসতেই হবে এই ছোট জায়গাটিতে।

সাগর, বালি, সৈকতে রক্তিম সূর্য্যের অনাবিল দৃশ্য আর সমুদ্র তরঙ্গে আছড়ে পড়া ঢেউ, সবুজ পাহাড়সহ প্রকৃতির অপার সৌন্দর্য দেখতে কার না ভালো লাগে। এই সবকিছু যদি একসঙ্গে দেখতে চান তবে নিশ্চিতে যেতে পারেন ভারতের গোয়া। জলপ্রপাত, প্রাচীন গুহা, ঐতিহাসিক গির্জা কী নেই এখানে। সৈকতে নারকেল গাছের সারি, পানকৌরি-বকসহ নানা পাখির কলতান, আর স্বচ্ছ পানির ফোয়ারা দেখতে রোজ গোয়ায় ভিড় করেন হাজারো পর্যটক। কয়েক দশক ধরেই বিশ্বজুড়ে পর্যটকদের আকর্ষণের কেন্দ্রবিন্দু গোয়া।

ঘোরাঘুরি

গোয়া ঘুরে দেখার জন্য বিভিন্ন পাবলিক/প্রাইভেট বাস কোম্পানীর প্যাকেজ রয়েছে; ৩০০-৫০০ রুপীর মধ্যে। সাউথ গোয়া, নর্থ গোয়া, দুধ সাগার ফলস এন্ড ওয়াইল্ড প্যাকেজ; এরকম প্যাকেজগুলো ঘুরে দেখতে পারেন সহজেই। এর চার-ছয়’জনের টিম হলে প্রাইভেট গাড়ি ভাড়া করে অনায়াসে ঘোরা যায়। এর বাইরে গোয়ার অন্যতম জনপ্রিয় জিনিস, মোটর বাইক ভাড়া। দিন হিসেবে বাইক ভাড়া নিয়ে তেল ভরে নিন নিজ খরচায়, দাপিয়ে বেড়ান গোয়ার গলি গলি’তে। তবে সাথে যেন ড্রাইভিং লাইসেন্স নিতে ভুলবেন না। 

ফন্টেনহাস পাড়া

গোয়ার রাজধানীর নাম হল পানাজি, পানজিম বলে স্থানীয় লোকেরা উচ্চারণ করে থাকেন। ঐতিহ্যপূর্ণ রংবেরং ফন্টেনহাস পাড়াতে লাগিয়ে আসুন এক চক্কর চট করে। মনে হবে আপনি চলে এসেছেন পর্তুগালের কোন নাম না জানা গ্রামে। এখানে, প্রতিটি বাড়ির গায়ে রামধনুর সাত রং। 

ভেলহা গোয়া

পানাজি থেকে আধ ঘণ্টার দূরত্বে অবস্থিত ভেলহা গোয়া। ভেলহা কথাটি একটি পর্তুগিজ শব্দ, অর্থ পুরাতন। পুরানো গোয়া একটি ঐতিহাসিক জায়গা। অসংখ্য পুরানো চার্চ, সরু গলি, পুরানো বাড়ি, কুনবি শাড়ি পরিহিতা গোয়ান রমণী, সব মিলিয়ে ৫০০ বছরের ইতিহাস এখানে সময় নামক এক শিল্পীর চর্চিত তুলির টানে মায়াবী রূপ পেয়েছে। পর্তুগিজ শাসন কালীন, এই ভেলহা গোয়া ইউরোপকে নিয়ে এসেছিল ভারতের দোরগোড়ায়। সঙ্গে অসংখ্য খৃষ্টান মিশনারী, যারা পরবর্তীকালে ভারতের বিভিন্ন উপজাতি বেল্টে যীশু খ্রীষ্টের বাণী প্রচার করেছিলেন। ভেলা গোয়ার অন্য নাম ছিল পূর্ব পৃথিবীর রোম। বাসিলিকা অফ বম জেসাস, এই অসহ্য সুন্দর গির্জাটিতে পা রাখলেই আপনি বুঝতে পারবেন রোম কি করে ভারতে পাড়ি দেয়। এটি একটি ইউনেস্কো ঐতিহ্যশালী প্রতিষ্ঠান।

গোয়াকে মোটামুটি দু’ভাগে ভাগ করা যায় উত্তর, দক্ষিণ। দক্ষিণ গোয়া সবকিছু থেকে দূরে, আরো দূরে। স্বাভাবিকভাবে ভিড় সেখানে কম। গোয়ার বিখ্যাত অধরা সমুদ্র, না ছোঁয়া জঙ্গল, লুকানো সমুদ্রতট, সব লুকিয়ে আছে দক্ষিণ গোয়াতে। গোয়া বিশেষজ্ঞদের মত এমনই।

দক্ষিণ গোয়াঃ

দক্ষিণের বীচগুলি তুলনামূলকভাবে শান্ত। সাদা বালি আর স্বচ্ছ জল, ভারতের মূল ভূখণ্ডের কাছাকাছি একমাত্র গোয়াতেই এ জিনিস দেখা যেতে পারে। দক্ষিণ গোয়া আমার প্রিয় বীচ গুলি হল- Colva, পালোলেম, পাটনেম, খোলা, ভেলসাও, বেনাওলিম। আরো নিচে আপনি কারোয়ার চলে আসতে পারেন, এখান থেকে কর্ণাটক শুরু।

গ্রীষ্মকালে বা শীতকালে, এখান থেকে ট্রেক করে দুধ সাগর ঝরনা অব্দি যাওয়া যায়। প্রতিদিন একটি নির্দিষ্ট সংখ্যক লোক দুধ সাগর পৌঁছতে পারেন তাই, যত সকালে সম্ভব যাত্রা শুরু করুন। কাছাকাছি গ্রামটিতে পৌঁছিয়ে আপনাকে স্থানীয় জীপ ভাড়া করে ট্রেকের শুরু অবধি যেতে হবে।

পলোলেম বিচ, দক্ষিণ গোয়া

পালোলেম সৈকত “হানিমুন বিচ” নামে পরিচিত। এই জায়গাটি তার শান্ত, নির্মল সমুদ্রের সাথে দর্শনার্থীদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে।রাতের বেলা সৈকতে হাঁটা ফ্ল্যাশলাইট আপনাকে একটি দুর্দান্ত অনুভূতি দেবে এবং কাঁকড়াগুলি আপনার কাছ থেকে দূরে চলে যেতে দেখে আপনি অবাক হয়ে যাবেন।

বাটারফ্লাই বিচ, দক্ষিণ গোয়া

এই সৈকতটি সত্যই দক্ষিণ গোয়ার গোপন স্বর্গ। একে “প্রজাপতি সৈকত” বলা হয় কারণ এতগুলি প্রজাপতিগুলি আপনার চারপাশে উড়ে যাওয়া আপনার পক্ষে অনায়াস। এটি সম্ভবত গোয়ার সবচেয়ে সুন্দর এবং শান্ত জায়গা। আপনি যখন এই সমুদ্র সৈকতের স্ফটিক স্বচ্ছ পানিতে সন্ধান করছেন তখন আপনি অনেকগুলি কাঁকড়া এমনকি সোনার মাছ দেখতে পান।

আগোন্ডা সমুদ্র সৈকত, দক্ষিণ গোয়া

আগোন্ডা সমুদ্র সৈকত প্রকৃতির সৌন্দর্যের সর্বোত্তম রূপকে উপস্থাপন করে এবং এটি দক্ষিণ গোয়ায় দেখার মতো কম পরিচিত স্থানগুলির মধ্যে একটি। আগোন্ডা সৈকত গোয়ার চারটি সমুদ্র সৈকতের একটি যেখানে আপনি নীড়ের কচ্ছপ দেখতে পাবেন।

সেন্ট অ্যালেক্স চার্চ, দক্ষিণ গোয়া

কার্টোরিয়ামে অবস্থিত, সেন্ট অ্যালেক্স চার্চ ভারতের দক্ষিণ অংশের অন্যতম প্রাচীন চ্যাপেল গীর্জা। এটি ১৫৯৭ সালে নির্মিত হয়েছিল আপনি যখন চার্চ ঘুরে দেখবেন, আপনি সহজেই মন্দিরের ধ্বংসাবশেষ দেখতে পাবেন।

দুধসাগর জলপ্রপাত, দক্ষিণ গোয়া

দুধসাগর জলপ্রপাত পৃথিবীর অন্যতম বিখ্যাত জলপ্রপাত গুলোর মধ্যে একটি। দুধসাগর নামটির অর্থ ‘দুধের সমুদ্র’। এ মহাকাব্যিক জলপ্রপাতটি পশ্চিম ভারতের কর্ণাটকের সীমান্ত গোয়াতে অবস্থিত। দুধসাগর প্রায় ১ হাজার ১৭ ফুট উঁচুতে এবং একশ ফুট প্রশস্ত।

উত্তর-গোয়াঃ

গোয়া অঞ্চলে আপনি বিভিন্ন সমুদ্র সৈকত খুঁজে পেতে পারেন – সাধারণত, গোয়া উপকূল দক্ষিণ এবং উত্তরে বিভক্ত যদিও দক্ষিণ সভ্যতা এবং আধুনিক অবকাঠামো দ্বারা চিহ্নিত করা হয়েছে, কিন্তু উত্তর গোয়ার সমুদ্র সৈকত এখনও জনপ্রিয়।

ভ্যাগেটর বিচ, উত্তর গোয়া

ভোগেটর সৈকত গোয়ার পার্টির পক্ষে অনুসন্ধান করা লোকদের জন্য উপযুক্ত জায়গা। এখানে আপনি অনেকগুলি বার, কারাওকে ক্লাব এবং মজাদার উপভোগ করতে পারেন। তবে এখানে আসা লোকদের জন্য সবচেয়ে উত্তেজনাপূর্ণ অংশ হ’ল পানির খেলা। স্থানীয় মানুষ বিভিন্ন ধরণের জলের মজাদার প্রস্তুতি নিয়েছে। উদাহরণস্বরূপ, আপনি জেট স্কিইং এবং প্যারাসেইলিং অনুশীলন করতে পারেন।

ক্যান্ডোলিম বিচ, উত্তর গোয়া

ক্যান্ডোলিম বিচটি বগা এবং ক্যালাঙ্গুট সৈকত থেকে খুব বেশি দূরে নয়। ক্যান্ডোলিম সৈকত পরিষ্কার, সাদা বালুকাময় সৈকত। এমনকি ডিসেম্বরেও আপনি পুরো দিনটি পানিতে কাটাতে পারেন। কিছু দুর্দান্ত শেকস রয়েছে সুস্বাদু খাবার এবং পানীয় সরবরাহ করে। আপনি যখন সেখানে থাকবেন, আপনি একটি বিছানা ভাড়া নিতে পারেন এবং স্থানীয়দের মধ্যে একজনের কাছ থেকে পায়ের ম্যাসেজ নিতে পারেন। এখানে ঝরনা এবং পরিবর্তনশীল কক্ষগুলি সহ পাবলিক টয়লেট রয়েছে।

শান্ত পরিবেশ, শীতল জলের খেলাধুলা এবং ক্রেজি নাইটলাইফ ক্যান্ডোলিম বিচকে সেরা সমুদ্র সৈকতে তৈরি করে যা এক্সপ্লোরাররা আসছে। এমন অনেক বাণিজ্যিক জায়গা নেই, তবে আপনি এই দুর্দান্ত সমুদ্র সৈকত দেখে অবাক হয়ে যাবেন।

থালসা, উত্তর গোয়া

ভ্যাগেটর ওড়জান বিচে অবস্থিত, এই জায়গাটি আপনাকে দুর্দান্ত আরব সাগরের দৃষ্টিনন্দন মনোভাব দিয়ে মুগ্ধ করবে। এই জায়গাটি আপনার প্রিয়জনদের সাথে রোদে দুপুরের খাবার বা একটি শীতল রাতের খাবারের জন্য সেরা জায়গা হতে পারে। এটি আপনাকে একটি অসামান্য খাবারের অভিজ্ঞতা দিতে পারে, আমরা কেবল “গ্রাম্য ব্রাসচেটা” পছন্দ করেছি এটি আশ্চর্যজনক এবং আমরা মনে করি আপনার এটির স্বাদও নেওয়া দরকার।

সিনকুরিম বিচ, উত্তর গোয়া

সিনকোরিম সৈকত উত্তর গোয়ার অন্যতম চমত্কার এবং প্রশস্ত সৈকত। এটি অন্যান্য চমৎকার সমুদ্র সৈকতের যেমন ক্যান্ডোলিম, বগা এবং ক্যালাঙ্গুটের দক্ষিণ দিকে স্থাপন করা হয়েছে।

আপনি যদি একজন ভাল সাঁতারু হন তবে পরিষ্কার গোছের কারণে উত্তর গোয়ায় এটি আপনার অবশ্যই দেখার জায়গা। এখানে আপনি স্কুবা ডাইভিং অনুশীলন করতে পারেন, যা খুব আকর্ষণীয় এবং মজাদার হতে পারে।

আরগুয়া ফোর্ট, উত্তর গোয়া

সপ্তদশ শতাব্দী থেকে, একটি পর্তুগিজ দুর্গটি সিনকুরিম সমুদ্র সৈকতে দাঁড়িয়ে আছে, এটি আরব সাগরকে উপেক্ষা করে বার্ডিজের দক্ষিণ-পশ্চিম প্রান্তে পুরো উপদ্বীপকে ঘিরে রেখেছে। আশ্চর্যজনক যে দুর্গটি বর্ণনা করতে আপনি কেবলমাত্র শব্দটি হলেন পর্তুগিজ শব্দ আগুয়াদ। দুর্গটি জাহাজগুলির জন্য জল সরবরাহ করত যা তার কাছে থামত। আগুয়াদা অর্থ জল, আর এভাবেই এই দুর্গটির নামকরণ হয়েছিল। এই দুর্গ অন্যান্য বিভিন্ন উদ্দেশ্যে পরিবেশন করেছে। এখানে সেরা আকর্ষণগুলি হ’ল জেলের ঘর এবং প্রাচীন বাতিঘর।

বম জেসুস, উত্তর গোয়ার বেসিলিকা

ইতিহাস যে ঐতিহ্যগুলি অন্বেষণ করতে পছন্দ করে তাদের জন্য, সম্ভবত এই নামটি প্রবর্তনের প্রয়োজন হবে না তবে বাকীগুলির জন্য এটি সহায়ক হবে। উত্তর গোয়ার ইউনেস্কোর ঐতিহ্যবাহী সাইটের তালিকায় বম যিশুর বেসিলিকা অন্তর্ভুক্ত রয়েছে। চার্চটি পর্তুগিজ শৈলীর স্থাপত্যের প্রতিনিধিত্ব করে।

বর্ষাকালীন গোয়া

এই সুমোহিনী নীল আকাশ আর নীল সাগরের প্রেমের দৃশ্য কিন্তু ক্ষণস্থায়ী। যে ক’টি দিন উত্তর ভারত শীতে থরথর কম্পমান, দক্ষিণ-পশ্চিমের এই সমুদ্র সৈকত ততদিন রোদে ঝলমল। মৌসুমী বায়ু এখানে নিয়ে আসে প্রচন্ড ঝন্ঝা। কালো মেঘ আকাশকে থমথমে করে তোলে। যে আরবসাগর সাধারনত শান্ত সুগভীর সহিষ্ণু, সে ফুঁসে ওঠে রাগে।

ভ্রমণের সেরা সময়

বছরের যেকোনো সময় আপনি গোয়া যেতে পারেন, তবে অক্টোবর থেকে মার্চ মাস হলো সবথেকে ভালো সময়। এ সময় সমুদ্রের ধারে আনন্দ যেমন উপভোগ করতে পারবেন তেমন পাহাড়ের ধারে ধারে কাজু গাছে কাজুবাদাম দেখে চোখ জুড়িয়ে যাবে।

কীভাবে যাবেন

ঢাকা থেকে কলকাতা পৌঁছে যদি শরীরে যথেষ্ট শক্তি থাকে তাহলে থাকার দরকার নেই, আসল সফরের জন্য রওনা হতে পারেন। এ কলকাতা থেকে গোয়া যাওয়ার জন্য সবচেয়ে সহজ উপায় ট্রেনে করে যাওয়া। এতে একটু সময় বেশী লাগলেও বাজেট এর কথা চিন্তা করে এটাই বেস্ট। এছাড়া মুম্বাই/ব্যাঙ্গালুরু হয়ে গোয়া যেতে পারেন। কলকাতা থেকে গোয়া যাওয়ার বেস্ট চয়েজ হল ১৮০৪৭ অমরাবতী এক্সপ্রেসে। । কলকাতা হতে রাত সাড়ে এগারোটায় সপ্তাহে চারদিন (সোম, মঙ্গল, বৃহস্পতি এবং শনি’বার) ছেড়ে যায় গোয়া’র উদ্দেশ্যে। পরেরদিন সারাদিন ট্রেনে কাটিয়ে তৃতীয়দিন দুপুর তিনটা নাগাদ পৌঁছে ভাস্কো ডা গামা জংশনে। প্রায় চল্লিশ ঘন্টার এই জার্নি’র জন্য ভাড়া স্লিপার ক্লাস ১,০০০ রুপী’র মধ্যে, থ্রি-টিয়ার এসি ২,৫০০ রুপী এর টু-টিয়ার এসি ৪,০০০ রুপী’র মধ্যে। রিটার্ন ট্রেন একই ষ্টেশন হতে কলকাতার দিকে (রবি, মঙ্গল, বৃহস্পতি, শুক্র’বার)সকাল সাতটা দশে ছেড়ে পরদিন রাত পৌনে এগারোটা নাগাদ হাওড়া স্টেশনে পৌঁছে। 

এই ট্রেন ছাড়াও আরও কিছু ট্রেনে করে সরাসরি গোয়া, অথবা মুম্বাই বা ব্যাঙ্গালুরু হয়ে গোয়া চলে যেতে পারেন। সেক্ষেত্রে মুম্বাই বা ব্যাঙ্গালুরু হতে গোয়া যাওয়ার স্লিপার, সেমি স্লিপার, চেয়ার কোচ (এসি/নন এসি) বাস রয়েছে। 

কোথায় খাবেন

খাওয়ার জন্য নানান রেস্টুরেন্ট রয়েছে। বলাইবাহুল্য সমুদ্রের ধারের রাজ্য গোয়া, মাছের এখানে কোন কমতি নেই। বেশির ভাগই সামুদ্রিক মাছ, পমফ্রেট, চিংড়ি। রান্নায়, বিশেষত কোঙ্কণী রান্নায়, বাঙ্গালীদের মতনই নারকেলের দুধ দিয়ে ভালোবাসা উদযাপন। সেই সাথে যুক্ত হয়েছে পর্তুগীজদের প্রভাব। টাটকা শুয়োরের মাংস দিয়ে কষিয়ে রান্না করা হয় ভিন্দালু। খাওয়া হয় গরম ভাত দিয়ে মেখে। প্রতিটি তরকারিতে কিছুটা টক ভাব। এই টক স্বাদের উৎস কিন্তু কোকুম ফল। সোল কাড়ি, কোকুম দিয়ে তৈরি একটি পানীয়। আর হ্যাঁ, আপনি যদি বাঙালি রান্নার খোঁজ করেন, নিরাশ হবেন না। প্রত্যেকটি বড় সমুদ্র সৈকতে বাঙ্গালীদের জন্য বিশেষ “মিল সিস্টেম” চালু আছে। কাতলা থেকে পাবদা সব রকমের নদীর মাছ সেখানে পরিবেশিত হয়। তবে হ্যাঁ মিষ্টি পাওয়া যাবে না। মিষ্টির জন্য আপনাকে গুড় ও নারকেল দিয়ে তৈরি বিবিন্কা কেকের ওপরেই নির্ভর করতে হবে।

কোথায় থাকবেন

গোয়া মূলত বীচ কেন্দ্রিক পর্যটন নগরী। এর বেশ কিছু প্রধান প্রধান বীচ ঘিরে গড়ে উঠেছে হোটেল-মোটেল জোন। মিরামার, বাগা, কোলভা, পানজিম, আনজুনা প্রভৃতি বীচ এরিয়ায় হোটেল এর অভাব নেই। আপনি চাইলে এসব এলাকায় ৫০০-৫০০০ রুপির মধ্যে যে কোন মানের (আপনার পছন্দ অনুযায়ী) হোটেলে রাত যাপন করতে পারেন। গোয়া টুরিজম এর সরকারী বেশ কিছু হোটেল মোটেল রয়েছে, সেগুলোতেও থাকতে পারেন। 

বি: দ্র : ঘুরতে গিয়ে দয়া করে পরিবেশ নষ্ট করবেন না,চিপস এর প্যাকেট, পানির বোতল এবং অপচনশীল দ্রব্য নির্ধারিত স্হানে ফেলুন।। এই পৃথিবী, আমার, আপনার সুতরাং নিজের দেশ এবং পৃথিবীকে সুন্দর রাখা এবং রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্বও আমার এবং আপনার হ্যাপি_ট্রাভেলিং

ভ্রমণ বিষয়ক তথ্য পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেইসবুক গ্রুপ এবং ফলো করুন আমাদের পেইজ