ইনানী সমুদ্র সৈকত ভ্রমণ-

ইনানী সমুদ্র সৈকত (Inani Sea Beach) কক্সবাজার জেলার পর্যটন সেক্টরে ইমাজিং টাইগার হচ্ছে ইনানী। বিশ্বের দীর্ঘতম বালুকাময় সৈকত কক্সবাজার যার দূরত্ব প্রায় ১২০০ কিলোমিটার। কক্সবাজার থেকে টেকনাফ পর্যন্ত দীর্ঘ একশো বিশ কিলোমিটার সমুদ্র সৈকতের মধ্যে সবচেয়ে সুন্দর,আকর্ষণীয় ও নয়নাভিরাম হচ্ছে ইনানী বীচ। এককথায় ইনানীকে প্রকৃতির ভূস্বর্গ বলা চলে। ইনানী সৈকত থেকে শুরু করে টেকনাফ পর্যন্ত এর প্রাকৃতিক প্রবাল এবং পাথর সমুদ্রের ভাঙ্গন থেকে সৈকতকে রক্ষা করছে। আবার, এসব পাথর ইনানী সৈকতকে দিয়েছে বাড়তি সৌন্দর্য।!

ইনানী বিচ
ছবিঃ ইনানী বিচ

কক্সবাজার থেকে ২৩ কিলোমিটার আর হিমছড়ি থেকে ১৪ কিলোমিটার দূরে ইনানী সমুদ্র সৈকত । ভাটার সময় ইনানী সমুদ্র সৈকতে সেন্টমার্টিনের মত প্রবাল পাথরের দেখা মিলে। এখানে কক্সবাজারের মত সাগর এত উত্তাল থাকে না আর এই শান্ত সাগরই পর্যটকদের আরো বেশী বিমোহিত করে। সাধারণত বিকেল বেলায় ইনানী সৈকত ভ্রমণের জন্য আদর্শ সময়। বিকেল বেলায় পর্যটক তুলনামূলক কম থাকে আর সাথে অপূর্ব সূর্যাস্ত দেখার সুযোগ হাতছাড়া করা পরবর্তীতে আপনার আফসুসের কারণ হতে পারে।!

এছাড়া টেকনাফ গামী মেরিন ড্রাইভ রোড দিয়ে ইনানী বীচে যাবার সময় হিমছড়ির পাহাড়, সমুদ্র তীরের সাম্পান, নারিকেল ও ঝাউবন গাছের সারি আর চারপাশের প্রাকৃতিক দৃশ্য দেখে আপনার ভ্রমণের সমস্ত ক্লান্তি দূর হয়ে মন প্রফুল্ল হয়ে উঠবে।সাগরের গর্জন। উথালপাথাল ঢেউ। নীল জলরাশি। মেরিন ড্রাইভ রোডের এগুলোই সৌন্দর্য। একদিকে সুউচ্চ পাহাড়। অন্যদিকে ফেনিল নীলাভ সমুদ্র। দু’দিকের নান্দনিকতার বুক চিরে গেছে কালো পিচের এ রোড। সুপারি বাগান, জলরাশিতে সারি সারি নৌকা ও ট্রলারহিমছড়ির কাছেই বড় বড় ঢেউ এসে আছাড় খাচ্ছে। বহুস্তর বিশিষ্ট সমুদ্রের ঢেউ মুগ্ধ করবে।

হিমছড়ি

পাহাড়, সমুদ্র ও ঝর্ণা সমন্বিত হিমছড়ি অপরূপ প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের লীলাভূমি এক পর্যটন স্পট।জেলা সদর হতে ৯ কিঃমিঃ দূরে হিমছড়ি অবস্থিত্, উদ্যানে অনেকগুলো জলপ্রপাত রয়েছে, যার মধ্যে হিমছড়ি জলপ্রপাতটি সবচেয়ে বিখ্যাত।কক্সবাজার থেকে একটু দূরে হওয়ায় ইনানী তুলনামূলক নিরিবিলি। এখন অনেকেই যাচ্ছেন। আর মাঝে হিমছড়ি ঝরনা। হিমছড়ি পাহাড়ের চূড়া থেকে সমুদ্র দেখতে অপরূপই লাগে। মাঝ পাহাড়ের লতা-পাতার ফাঁক গলিয়ে সমুদ্র দর্শন দারুণ অনুভূতির জন্ম দেবে ইনানি সমুদ্র সৈকত ।।

হিমছড়ি
ছবিঃ হিমছড়ি, সংগ্রহীত

কিভাবে যাবেন

ঢাকা বা যেকোনো প্রান্ত থেকে বাস বা ট্রেনযোগে চট্টগ্রাম। এরপর বাসে কক্সবাজার। ঢাকা থেকে অনেক বাস সরাসরি কক্সবাজার যায়। এমন বেশকিছু এসি বা নন-এসি পরিবহন পাওয়া যাবে। শ্রেণিভেদে ভাড়া ১১০০ টাকা থেকে শুরু। এরপর কলাতলীর ডলফিন মোড় থেকে সিএনজিযোগে ২৩-২৪ কিলোমিটার দূরের ইনানি সী বিচ যাওয়া যাবে। লোকাল ভাড়া জনপ্রতি ৮০ টাকা। রিজার্ভ করলে ৪০০-৫০০ টাকা। রিজার্ভ করে টেকনাফ ও যাওয়া যাবে।

কোথায় থাকবেন

ইনানী বিচের আশেপাশে কিছু হোটেল ও রিসোর্ট আছে। তার মধ্যে রয়েল ফাইভ স্টার টিউলিপ সী পার্ল রিসোর্ট, ইনানী রয়াল রিসোর্ট, লা বেল্যা রিসোর্ট উল্লেখযোগ্য। তবে কক্সবাজার থেকে কাছে হওয়ায় এবং অনেক হোটেল থাকায় কক্সবাজারে থাকাই সবচেয়ে সুবিধাজনক।থাকা ও খাওয়ার জন্য কক্সবাজার বিখ্যাত। এটি পর্যটন নগরী। এখানে কম বাজেট থেকে শুরু করে উচ্চ বাজেটের আবাসিক ও খাবার ব্যবস্থা আছে।

কোথায় কি খাবেনঃ

আনায়াসেই ৫-৬ ঘন্টায় ইনানী বীচ থেকে ঘুরে আসা যায় তাই চাইলে হালকা শুকনো খাবার সাথে রাখতে পারেন কিংবা পুনরায় কক্সবাজার ফিরে খেতে পারেন। কক্সবাজারে খাবার জন্য বিভিন্ন মানের রেস্তোরাঁ রয়েছে। মধ্যম মানের রেস্টুরেন্টের মধ্যে রোদেলা, ঝাউবন, ধানসিঁড়ি, পৌষি, নিরিবিলি ইত্যাদি উল্লেখ করার মত।!

বি: দ্র : ঘুরতে গিয়ে দয়া করে পরিবেশ নষ্ট করবেন না,চিপস এর প্যাকেট, পানির বোতল এবং অপচনশীল দ্রব্য নির্ধারিত স্হানে ফেলুন।। এই পৃথিবী, এই দেশ আমার, আপনার সুতরাং নিজের দেশ এবং পৃথিবীকে সুন্দর রাখা এবং রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্বও আমার এবং আপনার হ্যাপি_ট্রাভেলিং।।

ভ্রমণ বিষয়ক তথ্য পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেইসবুক গ্রুপ এবং ফলো করুন আমাদের পেইজ