বেনারস ভ্রমণ

বেনারস (Banaras, Kashi) বারাণসী বা কাশী ভারতের উত্তর প্রদেশে অবস্থিত প্রাচীন এক শহরের নাম। পৌরাণিক মতে, বিশ্বের সবচেয়ে প্রাচীন শহর বেনারস বা বারাণসী না দেখলে ভারত ভ্রমণ অসম্পূর্ণ থেকে যায়৷ বেনারাস এর অর্থ হচ্ছে উজ্জ্বল আলো তাই বেনারসকে আলোর শহর বা সিটি অব লাইটস (The City of Light) বলা হয়।। বেনারসের রাজাকে মুঘলরা ও ব্রিটিশরা সরকারি পদমর্যাদায় রাজা বলে মেনে নেন ও তা চলে ১৯৪৭ সালে স্বাধীনতার আগে অব্দি। বারাণসী সবসময়ই সবার কাছে প্রাণবন্ত, উচ্ছল, ও নবীন। সারা পৃথিবীর মানুষের কাছে এই শহরের আকর্ষণ অনন্য। ফলে দেশী, বিদেশি, ধর্মপরায়ন, ফটোগ্রাফার, ব্যবসাদার, গরিব, বড়লোক সমস্ত ধরনের মানুষজনকেই এখানে দেখা যায়। বারাণসী বা বেনারসকে বলা হয় ইতিহাসের জননী, ঐতিহ্যের মাতামহী ও কিংবদন্তির মহান-মাতামহী। পাপমোচনকারিণী পবিত্র গঙ্গার পশ্চিম তীরে অবস্থিত এই শহর কাশী নামেও পরিচিত ও পৃথিবীর অন্যতম পুরোনো জীবিত শহর। স্থানীয় মানুষ জন মনে করেন যে এই শহর প্রায় তিন হাজার বছর আগে তৈরি হয়।

১৮৫৭ সালে মার্ক টোয়াইন এই শহর দেখে বলেন – “বেনারস ইতিহাসের চেয়ে প্রাচীন, প্রচলিত ধর্মের থেকে প্রাচীন , গৌরব থেকে প্রাচীন এবং এই সকলকিছু একত্রিত করলে তার থেকেও দ্বিগুণ প্রাচীন শহর।”

বেনারস ভারতের আধ্যাত্মিক রাজধানী

শহরটি হিন্দু ধর্মাবলম্বীদের কাছে বিশেষ তাৎপর্যপূর্ণ। মূলত বাঙালিদের কাছে এটি কাশী এবং ভারতের অন্যান্য অঞ্চলের অধিবাসীদের কাছে এটি বারাণসী, বেনারস বা এর নিকটবর্তী কোনো উচ্চারণে অধিক পরিচিত। উত্তর প্রদেশের রাজধানী লখনৌ থেকে প্রায় ৩২০ কিলোমিটার দক্ষিণ-পূর্বে অবস্থিত এই শহরকে বলা হয় ভারতের আধ্যাত্মিক রাজধানী। এই বিশ্বাসকে কেন্দ্র করে বারাণসী শহরের বিভিন্ন স্থানে গড়ে উঠেছে অসংখ্য উপাসনালয়, মন্দির, স্নান ঘাট, সাধু-সন্ন্যাসীদের নিবাস ইত্যাদি। এসবের সমন্বয়ে পুরো শহরটি একটি প্রকৃত আধ্যাত্মিক নগরীতে পরিণত হয়েছে। শহরে প্রবেশ করলে আপনি নিজেও সেই আধ্যত্মিক আবেশ অনুভব করতে পারবেন। পুণ্য লাভের আশায় বিভিন্নজন আপনার সামনে ‘নামাক পারা’ (খাদ্য বিশেষ) নিয়ে হাজির হবেন এবং সবিনয়ে তা গ্রহণ করে তাকে ধন্য করতে বলবেন। আপনি তা না খেতে চাইলে উল্টো তারা ব্যথিত হবেন; কেননা অন্যকে আহার প্রদান করা তাদের কাছে একটি পুণ্যের কাজ। এমনকি সেখানকার অনেক তীর্থযাত্রী নতুন কোনো মেহমান না পেলে নিজেও খাদ্য গ্রহণ থেকে বিরত থাকেন। এখানকার তৈরি সিল্ক, সুগন্ধি, হাতির দাঁতের কাজ ভুবন বিখ্যাত।

ধর্মীয় গুরুত্ব

২৭টি ধর্মের মানুষ নিয়ে এই বেনারস শহর ! বেনারস নামটি গঙ্গা নদীর দুটি নাম মিলে হয়েছে। শহরের ধর্মীয় গুরুত্ব শীর্ষস্থান অধিকার করে অষ্টম শতাব্দীতে, যখন আদি শঙ্করাচারিয়া এখানে শিবের পুজো শুরু করেন ও মন্দির তৈরি করেন। মুসলিম রাজত্বেও এই শহর হিন্দু উপাসনা, অতীন্দ্রিয়বাদ ও কাব্যের এক অন্যতম গুরুত্বপূর্ণ পীঠস্থান ছিল। ফলে বারাণসী সংস্কৃতি ও ধর্মশিক্ষার একটা মিলনস্থলে পরিণত হয়। তুলসী-দাস তাঁর রাম চরিত মানস মহাকাব্য এখানেই রচনা করেছিলেন। অন্যান্য ব্যক্তিত্বের মধ্যে কবীর, রবিদাস, রবিশঙ্কর, ওস্তাদ বিসমিল্লা খান এখানেই বাস করতেন। উল্লেখ্য, হিন্দু ধর্মের স্থাপত্যের পাশাপাশি কাশীতে বেশ কিছু মুসলিম স্থাপত্যও রয়েছে। এর মধ্যে জ্ঞানবাপি মসজিদ, আলমগিরি মসজিদ, গঞ্জ-ই-শহিদান মসজিদ ও চৌখাম্বা মসজিদ বিশেষভাবে উল্লেখযোগ্য। সুলতান আমলে এসব মসজিদ নির্মাণ করা হয়। এছাড়া এখনও কাশী নগরীর জনসংখ্যার প্রায় ১৬ শতাংশ ইসলাম ধর্মের অনুসারী। অনেক ঐতিহাসিক মধ্যযুগে মুসলিম শাসকদের দ্বারা কাশী নগরীর অনেক মন্দির ধ্বংসের অভিযোগ উত্থাপন করে থাকেন। তবে এখন পর্যন্ত মন্দির-মসজিদের এই সহাবস্থান আমাদের শান্তির বার্তাই প্রদান করে।  

বেনারস শুধু এতটুকুতেই সীমাবদ্ধ না। এই শহরে বসে রচিত হয়েছে কালজয়ী বিখ্যাত কিছু উপন্যাস – রামচরিত , মানসমৃত এর মত উপন্যাস পরবর্তীতে ধর্মীয় গ্রন্থের মর্যাদা পান। কবির” তুলসিদাশ” রাবিদাশের” মত প্রাচীন লেখকদের শহর হচ্ছে বেনারস। বেনারসের আর একটি উল্লেখযোগ্য বিষয় হচ্ছে, সেখানকার শহরের প্রতিটি বাড়ির দেয়ালে তৈলচিত্র পাওয়া যায় এবং এই তৈলচিত্র দিয়ে সেই বাড়ির সম্মান এবং মর্যাদাও প্রকাশ করা হয়। বাড়ির মূল ফটক বা দরজা ভারী কারুকার্যের নির্মিত থাকে।

বেনারস এর দর্শনীয় স্থান

বারাণসী বিখ্যাত তার গলি ও ঘাট মন্দিরের জন্যে। এখানে প্রায় ৮৮টি ঘাট আছে যার মধ্যে অসি ঘাট, চেত সিং ঘাট, দ্বারভাঙ্গা ঘাট, দশাশ্বমেধ ঘাট, মান মন্দির ঘাট, সিন্ধিয়া ঘাট, ভোঁসলে ঘাট, মণিকর্ণিকা ঘাট বিখ্যাত,এছাড়া অন্নপূর্ণা মন্দির, কাশী বিশ্বনাথ মন্দির,  দূর্গা মন্দির, তুলসী মানস মন্দির, সারনাথ চুনার অষ্টভুজা মন্দির ইত্যাদি বিখ্যাত দর্শনীয় স্থান। স্থানীয় মন্দির ও গঙ্গার ঘাট দেখা হয়ে গেলে দেখতে পারেন বৌদ্ধ ধর্মের জন্মস্থান সারনাথ৷ বারাণসী তৈরি হয় তার গুরুত্বপূর্ণ পরিবহন সমৃদ্ধ বাণিজ্যিক প্রেক্ষাপটে।  

কাশী বিশ্বনাথ মন্দির

প্রাচীন মন্দির ধবংস হয়ে যাবার পর বর্তমান মন্দিরটি নির্মান করেন ইন্দোরের মহারানি অহল্যাবাঈ হোলকর (১৭৭৭) সাল। পাঞ্জাবের মহারাজা রঞ্জিত সিঙ প্রায় সাড়ে আটশো কেজি ওজনের সোনার পাতে মন্দিরের উপরের অংশ মুড়ে দেন। সংকীর্ণ গলিপথে মন্দিরে প্রবেশের সময় পান্ডারা আপনাকে ছেকে ধরবে। শুধুমাত্র দর্শন করাবার জন্য যে আপনি ২০ টাকার বেশি দিতে রাজি নন সে ব্যাপারে খোলাখুলি কথা বলে নেবেন। বিশ্বনাথ মন্দিরের সন্ধ্যারতি মনোমুগ্ধকর। বিশ্বনাথ মন্দিরের সন্ধ্যারতি সরাসরি দর্শন করতে এখানে ক্লিক করুন। মন্দিরের খোলা সময়: ভোর ৩.০০ টা এবং আরতি হয় ভোর ৩.০০ টা থেকে ৪.০০ টা পযন্ত। 

অন্নপূর্ণা মন্দির

বাবা বিশ্বনাথের গলিতেই দেখবেন অন্নপূর্ণা মন্দির। পেশোয়া বাজিরাও ১৭২৫ সালে এই মন্দিরটি নির্মান করেন। কাশীর কাশীবিশ্বনাথ মন্দিরের গায়েই দেখবেন আওরঙ্গাজেবের তৈরি বিতর্কিত ‘বেনীমাধব কা দারেরা ‘ নামে মসজিদ।  অন্নপূর্ণা মন্দিরের খোলা সময়: ভোর ৪.০০ টা থেকে সকাল ১১.৩০ পযন্ত এবং সন্ধা ৭.০০ টা থেকে রাত্রি ১১.০০ টা পযন্ত। আরতি হায় ভোর ৪.০০ টা।

দূর্গা মন্দির

নগরী শেয়লিতে গড়া লাল রঙের মন্দিরটি অষ্টাদশ শতকের। গর্ভাগৃহে দেবীর বিগ্রহ খুব জাগ্রত। দূর্গা মন্দির খোলা সময়: সকাল ৭.০০ টা থেকে  রাত্রি ৮.০০ টা পযন্ত।

তুলসী মানস মন্দির

দূর্গা মন্দির থেকে আরও কিছুটা এগিয়ে বা হাতে পড়ে সাদা রঙের সুবিশাল তুলসী মানস মন্দির। মন্দিরে শ্রীরামের বিগ্রহ ছাড়াও আকর্ষনীয় এখানকার দেওয়াল, যেখানে খোদাই করা আছে রামচরিতমানসের বিভিন্ন পদ। মন্দির খোলা সময়: সকাল ৫.৩০ থেকে  ও ৩.৩০ থেকে রাত্রি ৯.০০ টা পযন্ত।

ভারত কলাভাবন ও নিউবিশ্বনাথ মন্দির

পণ্ডিত মদনমোহন মঙ্গল কাব্যের সক্রিয় উদ্যোগে গড়া বেনারস ইউনিভার্সিটি কমপ্লেক্সেরমধ্যেই রয়েছে ভারত কলা ভাবন নাম মিউজিয়াম (মুধ্ল মিনিয়েচার পেন্টিং -এর সংগ্রহ দেখার মতো) এবং বিড়লাদের তেরি  সুউচ্চ নিউ বিশ্বনাথ মন্দির।

দশাশ্বমেধ ঘাট

ঘাট

বারানসীর মুখ্য আকর্সন গঙ্গা পারে আশির অধিক সুদৃশ্য ঘাটের সারি। ভোরবেলা সূর্য্যোদয়ের সময় হাজারো ভক্তের পুণ্যস্নান ও মাঙ্গলিক কর্মে জেগে ওঠে গঙ্গার ঘাট সহ সমগ্র বারাণসী। বারাণসীর ঘাটের স্বর্গীয় শোভা উপভোগ করতে হলে সকালের দিকে নৌকা ভাড়া করে দেখে নিন – দশাশ্বমেধ ঘাট, মনিকর্নিকা ঘাট, হরিশ্চন্দ্র ঘাট, তুলসী ঘাট, আসি ঘাট, মানমন্দির ঘাট, কেদার ঘাট, পঞ্চগঙ্গা ঘাট, প্রভৃতি। 

রামনগর ফোর্ট ও মিউজিয়াম

গঙ্গার অপর পারে বারানসীর  অতীত রাজাদের দুর্গ তথা প্রাসাদের একাংশে গড়ে উঠেছে মিউজিয়াম। এখানে দেখবেন – রাজাদের ব্যবহত বিভিন্ন আমলের ঘোড়ার গাড়ি , পালকি , চৌদোলা, কারুকার্যমন্ডিত হাওদা , পোশাক পরিচ্ছদ ,অভিনব ঘড়ি , প্রচুর অস্ত্রশস্ত্র, দুর্গের একটা অংশে দেখবেন রামনগরের বিখ্যাত রামলীলার কিছু দৃশ্যের  ফটোগ্রাফ।  

সারনাথ

বারানসী থেকে মাত্র ১০ কিমি দূরে সারনাথের বৌদ্ধ ধর্মের উন্মেষ হয়েছিল। বোধগয়ায় ‘বোধি’ লাভের পর বুদ্ধদেব সরনাথে এসে এখানকার মৃগ উদ্যানে সবার প্রথমে ধর্মীয় উপদেশ দান করেন। বৌদ্ধদের কাছে এই ঘটনা ‘মহাধর্মচক্র প্রবর্তন’ নামে খ্যাত। প্রসঙ্গত জানিয়ে রাখি, বুদ্ধদেবের আমলে এই সুপ্রাচীন জনপদের নাম ছিল ‘ঋষিপত্তন’। সারনাথ নামটা এসেছে সারঙ্গনাথ (সারঙ্গ শব্দের অর্থ মৃগ) থেকে।

চুনার

বারাণসী থেকে ৩৫ কিমি দুরে চুনারের প্রধান আকর্ষণ গঙ্গার ধারে সুবিশাল দুর্গ। পুরানমতে বামন অবতারে ভগবান বিষ্ণু তার প্রথম চরণ স্থাপন করেন এখানকার পবিত্র ভূমিখন্ডে তাই এর নাম হয় চরনাদ্রি। উজ্জয়িনীর শাসক মহারাজা বিক্রমাদিত্যের ভাই ভতৃহরি এখানে কঠিন তপস্যা করার পর জীবন্ত সমাধি নিয়েছিলেন। চুনার দুর্গের ইতিহাসও সুপ্রাচীন। অনেক ঐতিহাসিকের মতে রাজা সহদেব ১০২৯ সালে বর্তমান দুর্গটি নির্মান করেন। রাজা সদেবের সাহসী কন্যা সোনহা বা সোনওয়ার সঙ্গে তত্কালীন মাহবার মহারাজা আলহাখন্দের বিবাহস্থল হিসাবে নির্মিত ‘ সোনহা-মন্ডপ ‘ আজও দুর্গের প্রধান দ্রষ্টব্য।

বিন্ধ্যাচল

বারাণসী থেকে ৭০ কিমি দুরে ৫১ সতীপীঠের অন্যতম বিন্ধ্যাচলের প্রধান দ্রষ্টব্য বিন্ধ্যাবাসিনী মন্দির। এই স্থানে সতীর বাম পায়ের আঙুল পড়েছিল। পুরানমতে এই সেই স্থান যেখানে দেবী স্বহস্তে শুম্ভ নিশুম্ভকে বধ করেন।

অষ্টভুজা মন্দির

বিন্ধ্যবাসিনী মন্দির থেকে ৩ কিমি দুরে বিন্ধ্য পবর্তের ওপর দেবী অষ্টভুজা (প্রকৃতপক্ষে দূর্গা) মন্দির। পুরানমতে যশোদার গর্ভজাত মহামায়াকে কংস দেবকীর অষ্টমগর্ভের সন্তান ভেবে আছাড় মারতে উদ্যত হলে, মহাহায়া আকাশবাণী শুনিয়ে অদৃশ্য হয়ে যান। এর পর বর্তমান মন্দির স্থলে আবিভূত হয়ে ভগবতী দূর্গা রূপে এখানে সদা বিরাজমান। সংকীর্ণ গুহাপথে ভেতরে গিয়ে মূর্তি দর্শন করতে হয়। 

কালীখোহ

বিন্ধ্যপবর্তের ওপরে একটা গুহার মধ্যে মাকালির জাগ্রত মুখ কালীখোহ নাম প্রসিদ্ধ। পূরণমতে রাক্ষসদের হাতে দেবতাদের লাঞ্ছিত হবার কথা শুনে এই স্থলে গৌরবর্ণা পার্বতী এত ক্রুদ্ধ হয়ে ওঠেন যে ওনার স্বর্ণ অঙ্গ কাজলের মতো কালো হয়ে যায় (দেবীর নাম তখন থেকে কালী)।এখানেও দেবীর নাম কালী, চন্ডী ও চামুন্ডা। ধর্মপ্রাণ ভক্তরা পার্বত্যপথে বিন্ধ্যাবাসিনী অষ্টভুজা কালীখোহের মধ্যে মহাত্রিকোশ পরিক্রমা সম্পন্ন করেন। 

ভ্রমণের সেরা সময়

অক্টোবর থেকে মার্চ মাসে যেহেতু এখানকার তাপমাত্রা বেশ মনোরম থাকে, সেহেতু এই সময়ই হল বারাণসী পরিদর্শনের সেরা সময়। যেহেতু শীতের মাসগুলিতে এখানে চরম জাঁকজমকতার সাথে উৎসব-অনুষ্ঠানগুলি পালিত হয়, তাই এইসময় এই স্থান বহু পর্যটকদের এখানে টেনে আনে। গ্রীষ্মকালে এই শহর খুবই উষ্ণ ও আর্দ্র হয়, সুতরাং এপ্রিল থেকে অক্টোবরের মধ্যবর্তী সময়ে এই শহরে ভ্রমণ না করাটাই এক ভালো ধারণা।

উত্তর ভারতের এই প্রাচীনতম শহর তার রুপে বর্ণে গন্ধে যতটাই প্রাচীন হোক না কেন এই শহর আজও তার জৌলুস ধরে রেখেছে। তাই এই শহর কখনো ঘুমিয়ে যায় না, পুরনোও হয়ে যায় না। আজও ভিন্ন ভিন্ন ধর্মের আচার অনুষ্ঠানের সাথে এবং তীর্থযাত্রার জন্য প্রসিদ্ধ এই শহর ভ্রমন পিপাসুদেরকে তৃষ্ণাক্ত করে রেখেছে। সেই সাথে ধরে রেখেছে তার প্রাচীন সৌন্দর্য ।

কীভাবে যাবেন

ট্রেন

দিল্লি, আগ্রা, লক্ষ্ণৌ, মুম্বাই ও কলকাতা সহ একাধিক শহর থেকে বারাণসী পৌঁছানোর সবচেয়ে সহজ উপায় ট্রেন। বারাণসী জংশনের স্টেশন কোড: বি এস বি।  

প্লেনে

বারাণসী বিমানবন্দর শহরের কেন্দ্র থেকে ২৫ কিমি দূরে অবস্থিত। দিল্লি, মুম্বাই, কলকাতা, বেঙ্গালুরু, হায়দ্রাবাদ, খাজুরাহ ও বিশাখাপত্তনমথেকে প্রতিদিন ছাড়ে এয়ার ইন্ডিয়া, জেট কনেক্ট, স্পেস জেট এবং ইন্ডিগো।

কোথায় থাকবেন

পযর্টক ও তীর্থযাত্রীদের প্রিয় শহর বরাণসীতে পাবেন অতি সাধারণ লজ বা ধর্মশালা থেকে মাঝারি ও ভালো মানের হোটেল। ইউ পি ট্যুরিজমের রাহী ট্যুরিস্ট বাংলো(২২০৮৪১৩/৫৪৫) ক্যান্টনমেন্ট স্টেশনের  কাছে প্যারেড কঠিতে। পান্ডে ঘাটে অতি সাধারণ মানের বিষ্ণু রেস্ট হাউস (২৪৫০২০৬) এবং কালিকা গলিতে যোগি লজ (২৩৯২৫৮৮) এছাড়া

বেনারসে থাকার অনেক জায়গা ৷ তবে ক্যান্টনমেন্টের কাছাকাছি থাকাটাই ভালো, ভিড় কম ৷ স্টেশন থেকেও বেশ কাছে  অবশ্য বেনারস ঘাটের কাছেও অনেক ভালো ভালো হোটেল আছে৷ বাঘা বাইনের সেই বিখ্যাত উক্তির মতো , ‘ দেখে শুনে একটা বেঁচে নিলেই হলো।

বি: দ্র : ঘুরতে গিয়ে দয়া করে পরিবেশ নষ্ট করবেন না,চিপস এর প্যাকেট, পানির বোতল এবং অপচনশীল দ্রব্য নির্ধারিত স্হানে ফেলুন।। এই পৃথিবী, আমার, আপনার সুতরাং নিজের দেশ এবং পৃথিবীকে সুন্দর রাখা এবং রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্বও আমার এবং আপনার হ্যাপি_ট্রাভেলিং

ভ্রমণ বিষয়ক তথ্য পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেইসবুক গ্রুপ এবং ফলো করুন আমাদের পেইজ