কার্শিয়াং ভ্রমণ-
কার্শিয়াং( Kurseong) দার্জিলিং জেলার একটি শৈল শহর যাকে বলা হয় সাদা অর্কিডের দেশ। কার্শিয়াং -এর স্থানীয় নাম খার্সাং, লেপচা ভাষায় এই কথার অর্থ ‘সাদা অর্কিডের দেশ’। দার্জিলিং যদি পাহাড়ের রাণী হয়, কার্শিয়াং তবে নিশ্চিত করেই পাহাড়ের রাজকুমারী। সাদা অর্কিডের দেশ কার্শিয়াং দার্জিলিং জেলার এক পরিচিত শহর। এই শহর মোটেই অফবিট নয়, বরং পাহাড় নিয়ে বাঙালীর মনে যে চিরকালীন নস্টালজিয়া তার অনেকটা জুড়েই এই শহর। এই শহরের রাস্তা জানে ভ্রমণ প্রিয় বাঙালীর পাহাড় প্রেমের লুকোনো মনের হদিশ।
এটি ১৪৫৮ মিটার উঁচুতে অবস্থিত। কার্শিয়াং দার্জিলিং থেকে মাত্র ৩০ কিলোমিটার দূরে। এখানকার আবহাওয়া সারা বছরই আরামদায়ক, শীতকালের ঠান্ডা দার্জিলিং এর মতো তীব্র নয়। কার্শিয়াং শিলিগুড়ি থেকে ৪৭ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত এবং এটি শিলিগুড়ির সঙ্গে সড়ক পথ ও হিমালিয়ান রেলওয়ে দ্বারা যুক্ত। নিকটতম বিমানবন্দর বাগডোগরা। নিকটতম রেল স্টেশন নিউ জলপাইগুড়ি, এটি কার্শিয়াং থেকে ৫৩ কিলোমিটার দূরে। শহরের অর্থনীতির ভিত্তি স্কুল ও পর্যটন।
ব্রিটিশরা সিকিমের সম্রাটের থেকে ১৮৩৫ সালে কার্শিয়াং দখল করে নেয়। পরবর্তী কালে ১৮৮০ সাল থেকে এটি ব্রিটিশ শাসকদের বেড়ানোর জায়গায় পরিণত হয় এবং অসুস্থদের স্বাস্থ্য ফেরানোর জায়গা হিসেবে প্রসিদ্ধি লাভ করে। কার্শিয়াং এর উচ্চতম স্থান ডাউহিল, বিশ্রামের জন্য দারুণ একটি জায়গা।
পশ্চিম বঙ্গের ট্যুরিজমের হট কেক দার্জিলিং সবার পরিচিত কিন্তু দার্জিলিং এর আশে পাশে রয়েছে অসংখ্য সুন্দর সুন্দর স্থান যেগুলো সম্পর্কে আমরা অনেকেই জানি না এজন্য আজ Tourist Signal এর পক্ষ থেকে জানাবো কার্শিয়াং সম্পর্কে। সারাবছরই এখানে অদ্ভুৎ মনোরম পরিবেশ বিরাজ করে, তবে বর্ষার কার্শিয়াং মোহময়ী সুন্দরী। মেঘ-কুয়াশার লুকোচুরিতে ব্যাস্ত শহরের পাশ দিয়ে চলে যায় ঝিক ঝিক টয় ট্রেন। এ দৃশ্য মনোরম-নয়নাভিরাম। কার্শিয়াং নিয়ে তাই নতুন করে লেখার কিছু নেই। কার্শিয়াং নাম শুনলেই মনের মাঝে ভেসে ওঠে ‘খাদের ধারের রেলিংটা’ আরও কত কিছু।
কার্শিয়াং এর দর্শনীয় স্থানঃ
কার্শিয়াং থেকে দেখার বা ঘুরার জায়গার অভাব নেই। মাকাইবাড়ী চা বাগান টি অবশ্যই ঘুরে দেখবেন । পৃথিবীর শ্রেষ্ঠ চা এই বাগানেরই। ডাউহিলের গা ছমছমে প্রকৃতি আপনার ভালো লাগবেই। অজস্র চা বাগান, আম্বতিয়া শিব মন্দির, ফরেস্ট মিউসিয়াম প্রভৃতি ঘুরে দেখুন।
- ডিয়ার পার্ক
- নেতাজি সুভাস চন্দ্র বসু মিউজিয়াম
- দার্জিলিং হিমালয়ান মিউজিয়াম
- ভিক্টোরিয়া বয়েস স্কুল
- ডাউহিল গার্লস স্কুল
- ঈগল’স ক্রাগ
- ডাউহিল এবং ডো হিল পার্ক
- গিদ্দা পাহাড় ভিউ পয়েন্ট
- কার্শিয়াং থেকে দার্জিলিং পর্যন্ত টয় ট্রেন রাইড
বেড়ানোর উপযুক্ত সময়
কার্শিয়াং বেড়ানোর সেরা সময় মার্চ থেকে মে মাস এবং আগস্টের শেষ থেকে অক্টোবর।
কিভাবে যাবেন
শিলিগুড়ি থেকে ভাড়া বা শেয়ারড জীপে যেতে পারেন। কলকাতা থেকে বাস বা ট্রেনে নিউ জলপাইগুড়ি, বিমানে গেলে বাগডোগরা চলে যান। এরপর ভাড়া বা শেয়ারড জীপে। দার্জিলিংয়ে যাওয়ার পথে কার্শিয়াং নেমে ঘুরে দেখতে পারেন। এছাড়া মিরিক বাস স্ট্যান্ড থেকে বাসে কিংবা শেয়ারড জীপে কার্শিয়াং যেতে পারবেন।
কোথায় থাকবেন
কার্শিয়াং এ থাকার জন্যে বেশ অনেক হোটেল রয়েছে। কার্শিয়াং এ মধ্যম মানের হোটেলের এর মধ্যে আছে অমরজিৎ হোটেল, কার্শিয়াং ট্যুরিষ্ট লজ, প্রধান গেস্ট হাউজ ইত্যাদি। এছাড়া অল্প বাজেটের মধ্যে আছে মাকাইবাড়ি হোম স্টে (Makaibari Home Stays) এবং সিঙ্গেল হোম স্টে (Singell Home Stay)। এছাড়া ৩ স্টার মানের হোটেল এর মধ্যে Cochrane Place এবং The White Orchid Resorts & Spa অন্যতম।
বি: দ্র : ঘুরতে গিয়ে দয়া করে পরিবেশ নষ্ট করবেন না,চিপস এর প্যাকেট, পানির বোতল এবং অপচনশীল দ্রব্য নির্ধারিত স্হানে ফেলুন।। এই পৃথিবী, আমার, আপনার সুতরাং নিজের দেশ এবং পৃথিবীকে সুন্দর রাখা এবং রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্বও আমার এবং আপনার হ্যাপি_ট্রাভেলিং
ভ্রমণ বিষয়ক তথ্য পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেইসবুক গ্রুপ এবং ফলো করুন আমাদের পেইজ
Comment (0)