হাজাছড়া ঝর্ণা ভ্রমণ-
হাজাছড়া ঝর্ণা (Hazachora Waterfalls/Shuknachara Falls) রাঙামাটি জেলায় অবস্থিত একটি প্রাকৃতিক পাহাড়ি ঝর্ণা । সাজেকগামী পর্যটকদের কাছে বর্তমানে ঝর্নাটি অত্যন্ত আকর্ষণীয় হয়ে উঠেছে। হাজাছড়া লোকালয়ের কাছাকাছি হওয়া সত্ত্বেও ঝর্ণার পরিবেশ এখনো অনেকটা বুনো। ঝর্ণার হীমশীতল পানি আর সবুজেঘেরা ঝিরিপথ পর্যটকদের দৃষ্টি আকর্ষণ করে। শীতকালে এর পানির প্রবাহ কমে যায়। আর বর্ষায় হয়ে ওঠে প্রাণবন্ত। এখানে মূলত সারাবছরই কম-বেশি পানি থাকে।
বর্ষার সময় ঝর্ণার ঝিরিপথে পানি তুলনামূলক বেড়ে যায় এবং পথটি কর্দমাক্ত থাকে। তাই পর্যটকদের ভালো মানের গ্রিপযুক্ত ট্র্যাকিং জুতা ব্যবহার করার পরামর্শ দেয়া হয় এবং সর্তকতা অবলম্বন করতে বলা হয়।
অবস্তান
হাজাছড়া ঝর্ণা রাঙামাটি জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার বাঘাইহাট এলাকায় অবস্থিত। মূল রাস্তা হতে ১৫ মিনিট ঝিরিপথ ধরে হেঁটেই পৌঁছানো যায় ঝর্ণার পাদদেশে। ঝর্ণার হীমশীতল পানি আর সবুজেঘেরা ঝিরি পথ পর্যটকদের দৃষ্টি কেড়ে নেয়। শীতকালে এর পানির প্রবাহ কমে যায়।
নামকরণ
হাজাছড়া নামক এলাকা হতে ঝর্ণার উৎপত্তি বিধায় এর নাম হাজাছড়া ঝর্ণা। এটি শুকনাছড়া ঝর্ণা বা দশ নাম্বার ঝর্ণা নামেও পরিচিত। ঝর্ণাটির স্থানীয় পাহাড়িদের দেয়া নাম হল চিত জুরানি থাংঝাং ঝর্ণা ; যার অর্থ মন প্রশান্তি ঝর্ণা।অবস্থানগত ভাবে হাজাছড়া ঝর্ণা রাঙামাটির অন্তর্গত হলেও এটি ভ্রমণ করার জন্যে খাগড়াছড়ি হয়ে যাওয়াটাই উত্তম। খাগড়াছড়ির দিঘীনালা থেকে হাজাছড়া রওনা দিতেই আপনার চোখে পড়বে প্রকৃতির নিজের হাতে আঁকা দৃশ্যপট। তীর ছুঁয়ে যাওয়া মাইনী নদীর জলের স্রোত। পাহাড়ি ঢলে নদীর দু তীর জুড়ে উপচে পড়া জলের স্রোত। রাস্তার দুপাশ জুড়ে আদিবাসীদের বসবাস। পথের ধারেই নানান শস্যের জুমের ক্ষেত। সবুজে ঘেরা ঝিরি পথ পেরোলেই স্বাগতম জানাবে হাজাছড়া বিশালকায় ঝরনা। পুরো বর্ষায় হাজাছড়ার রূপের তুলনা সে নিজেই।সাজেক ভ্যালী ঘুরে ফেরার পথে স্নিগ্ধ হওয়ার মত এক জায়গা হাজাছড়া ঝর্ণা। ম্যাক্সিমাম পর্যটক সাজেক থেকে ফেরার পথে বা যাওয়ার পথে এই ঝর্ণা দর্শন করেন।।এটা রাঙামাটি পার্বত্য জেলার বাঘাইছড়ি উপজেলার সাজেক ইউনিয়নের বাঘাইহাট এলাকায় অবস্থিত। বাঘাইছড়ি উপজেলার ১০ নম্বর রাস্তার পাশে এই ঝর্ণার অবস্থান।।
যেভাবে যাবেন
ঢাকার গাবতলী-ফকিরাপুল-সায়েদাবাদ থেকে প্রতিদিন দিনরাত খাগড়াছড়ি ও দীঘিনালার বিভিন্ন পরিবহনের এসি, নন-এসি বাস ছেড়ে যায়। দীঘিনালা থেকে অটোবাইকে হাজাছড়া যেতে সময় লাগবে ২০ থেকে ৪০ মিনিট।
কোথায় খাবেন
হাজাছড়া ঝর্ণার আশেপাশে খাবার ব্যবস্থা নেই..তাই ভালো হয় ঝরনায় যাওয়ার সময় সাথে শুকনো খাবার পর্যাপ্ত পানি নিয়ে যাওয়া। আর খাগড়াছড়ি শহরে বেশ কিছু খাবার হোটেল আছে এসে খেতে পারেন অথবা হাতে সময় থাকলে কাছেই নিউজিল্যান্ড পাড়া ঘুরে আসতে পারেন।।
কোথায় থাকবেন
রাত্রি যাপনের জন্য আপনাকে খাগড়াছড়ি শহরে থাকতে হবে। খাগড়াছড়িতে বেশকিছু আবাসিক হোটেল রয়েছে, হোটেল শৌল্য সুবর্ন, জিরান হোটেল, হোটেল লিবয়ত,চৌধুরী বাডিং,থ্রী স্টার,ফোর স্টার, উপহার,নিলয় হোটেল ইত্যাদি উল্লেখযোগ্য।।
অপূর্ব সুন্দর, অসাধারন, নয়নাভিরাম এ ঝর্না। এটি এতই দৃষ্টিনন্দন আর ব্যতিক্রম যে কারো আর দেরী সইবে না ঝর্নার শান্ত শীতল জলে ঝাপিয়ে পরতে। ঝর্ণার নীচে দাঁড়িয়ে অনায়েসেই স্নানের কাজটি সেরে নেয়া যায়। দীর্ঘ ক্লান্তিকর হাটার কষ্ট মুহুর্তেই ধুয়ে যাবে ঝর্ণার জলে। ঝর্ণার জলের শীতল পরশ আপনাকে ক্ষনিকের জন্য হলেও ভুলিয়ে দেবে আবার কতটা পথ আবার হাটতে হবে ফেরার জন্য।
বি: দ্র : ঘুরতে গিয়ে দয়া করে পরিবেশ নষ্ট করবেন না,চিপস এর প্যাকেট, পানির বোতল এবং অপচনশীল দ্রব্য নির্ধারিত স্হানে ফেলুন।। এই পৃথিবী, এই দেশ আমার, আপনার সুতরাং নিজের দেশ এবং পৃথিবীকে সুন্দর রাখা এবং রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্বও আমার এবং আপনার হ্যাপি_ট্রাভেলিং।।
ভ্রমণ বিষয়ক তথ্য পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেইসবুক গ্রুপ এবং ফলো করুন আমাদের পেইজ
Comment (0)