মালদ্বীপ ভ্রমণ-
মালদ্বীপ(Maldives)- সমুদ্রপৃষ্ঠ থেকে সর্বোচ্চ উচ্চতা মাত্র দুই দশমিক তিন মিটার এবং গড় উচ্চতা মাত্র এক দশমিক পাঁচ মিটার, এরকম এক জল ডুবুডুবু দেশের নাম মালদ্বীপ। বিশ্বের অন্যতম সুন্দর দেশ ভারত মহাসাগরের দ্বীপরাষ্ট্র – মালদ্বীপ। শান্ত ও মনোরম পরিবেশ আর চোখ জুড়ানো সমুদ্র সৈকত মালদ্বীপের প্রধান আকর্ষণ। যেখানে স্বচ্ছ নীল পানি আর সাদা বালির খেলা। শ্রীলঙ্কা থেকে প্রায় ৪০০ মাইল দক্ষিণ পশ্চিমে ১১৯২টি ছোট দ্বীপ নিয়ে মালদ্বীপ। সরল, শান্ত ও মনোরম পরিবেশ,আদিম সমুদ্র সৈকত মালদ্বীপের প্রধান আকর্ষণ।
এক হাজার দুই শ’রও বেশি ছোট ছোট দ্বীপ নিয়ে গঠিত এই দেশ । তাবৎ পৃথিবীর পর্যটকদের বিলাস যাপনের অন্যতম লক্ষ্য এই দেশ। ঘন নীল আর শ্যাওলা সবুজ ঢেউ খেলানো ভারত মহাসাগরের বুকে দোল খাওয়া এই অনিন্দ্য সুন্দর ভূখণ্ডের কোনও তুলনাই নেই।
পৃথিবীর মধ্যে মালদ্বীপের সুন্দর প্রাকৃতিক দৃশ্য বিশ্বব্যাপী আকর্ষণীয় ও জনপ্রিয়। এখানকার সমুদ্রের রঙ অতি পরিস্কার ও নীল এবং বালির রঙ সাদা। সমুদ্রের মধ্যে হাজার ধরনের মাছ দেখা যায়। মালদ্বীপে বেড়াতে এলে আপনি থাকতে পারেন সমুদ্রের পানির ওপর বিশেষভাবে নির্মিত বাড়িতে। এসব বাড়ি থেকে পর্যটকরা সমুদ্রের বিভিন্ন রঙের মাছ ও প্রাণি খুব কাছ থেকে দেখার সুযোগ পান; শুনতে পান সামুদ্রিক পাখির ডাক। আর যদি আপনি সমুদ্র সৈকতে থাকতে চান, তাহলে আপনার জন্য আছে বিশেষভাবে নির্মিত বাড়ি। সাধারণত সমুদ্রের মধ্যে নির্মিত বাড়িগুলো সৈকত থেক ১০ মিটার দূরে অবস্থিত। কাঠের সেতু দিয়ে সেগুলোকে সৈকতের সঙ্গে সংযুক্ত করা হয়। কিছু কিছু জায়গায় কাঠের সেতুও থাকে না; পর্যটকরা ছোট নৌকায় করে সমুদ্রের বুকে নির্মিত বাড়িতে প্রবেশ করেন।
মালে আইল্যান্ডঃ
মালে হল মালদ্বীপ প্রজাতন্ত্রের রাজধানী ও সর্বাধিক জনবহুল শহর। এ শহরের জনসংখ্যা ১৩৩৪১২ এবং আয়তন ৯.২৭ বর্গ কিলোমিটার (৩.৫৮ বর্গ মাইল)। এটি পৃথিবীর অন্যতম সর্বাধিক ঘনবসতিপূর্ণ শহরগুলোর মধ্যে অন্যতম।
প্রাকৃতিক সৌন্দর্যে ভরপুর মালদ্বীপ হলো অসংখ্য দ্বীপের দেশ। ছোট ছোট প্রায় ১২০০ দ্বীপের মধ্যে একটি হলো মালে আইল্যান্ড। আর পর্যটকদের বিশেষ আকর্ষণ এই দ্বীপের প্রতি। হানিমুন কাপলদের জন্য উপযুক্ত জায়গা হলো এই মালে আইল্যান্ড।।চারদিকে নারিকেল, সুপারি গাছসহ অন্যান্য নানা গাছে পরিপূর্ণ ছোট্ট একটি দ্বীপ মালে। এই মালে আইল্যান্ড সব সময় লোকারন্য থাকে।। মালে আইল্যান্ডে পাবেন সাগরের মাঝে নগরায়নের ছোঁয়া। হানিমুন কাপলদের জন্য বেস্ট জায়গা হলো মালে আইল্যান্ড।। সার্ফিং ও স্নোকেলিং করার জন্য ও এটা বেস্ট জায়গা।তাই এখানে সার্ফিং করার মজাও পাবেন।।
বারোস দ্বীপঃ
বারোস অন্যতম সুন্দর একটি দ্বীপ, যা মালদ্বীপে অবস্থিত। ছোট-বড় প্রায় আড়াই হাজার দ্বীপ নিয়ে গঠিত দেশ মালদ্বীপ। সবগুলো দ্বীপই অপার সৌন্দর্য বহন করে। হানিমুনের জন্য বিখ্যাত এই বারোস আইসল্যান্ড। ভ্রমণের জন্য পর্যটকদের কাছে মালদ্বীপ একটি আকর্ষণীয় স্থান। সমুদ্রবিলাসের জন্য ও নিরিবিলি সময় কাটানোর জন্য এখানে সমস্তরকম আয়োজন রয়েছে। অন্যতম সুন্দর একটি দ্বীপ, যা মালদ্বীপে অবস্থিত।
মালদ্বীপ প্রশাসনের উদ্যোগে নির্মিত বিলাসবহুল রিসোর্ট বারোস আইল্যান্ড। এখানে রয়েছে সমুদ্রের পানির ওপর বিশেষভাবে নির্মিত বাড়ি। এসব বাড়িতে থাকার কারনে পর্যটকরা সমুদ্রের বিভিন্ন রঙের মাছ ও প্রাণী খুব কাছ থেকে দেখতে পারেন, শুনতে পারেন সামুদ্রিক পাখির ডাক। সমুদ্রের স্বচ্ছ পানির ভেতরে কোরাল রিফ, উত্তাল সাগরের ঢেউ, কচ্ছপ ও নানা ধরনের রঙ্গিন মাছ সব এক ভিন্ন ধরনের আনন্দ দেয় পর্যটকদের মনে। অথবা সমুদ্র সৈকতে থাকতে চাইলে আছে বিশেষভাবে নির্মিত বাড়ি। সৈকত থেকে ১০ মিটার দূরে অবস্থিত বিশেষভাবে নির্মিত বাড়িগুলো কাঠের সেতু দিয়ে সেগুলোকে সৈকতের সঙ্গে সংযুক্ত করা থাকে। কিছু কিছু বাড়িতে কাঠের সংযুক্ত সেতু থাকে না, সেক্ষেত্রে পর্যটকরা ছোট নৌকায় করে সমুদ্রের বুকে নির্মিত বাড়িতে আসা-যাওয়া করেন। এখানকার পানির উপরে বিচ, চালাদেওয়া বাগানবাড়ি ও ব্যক্তিগত পুলগুলো খুব নান্দনিকতায় সাজিয়ে রাখা হয়েছে। বারোস আইল্যান্ড নামের একতলা বিচ বাংলো দিয়ে ছিমছাম সাজানো দ্বীপটিতে রয়েছে রেস্টুরেন্ট, সুইমিংপুল, ফুটবল মাঠ, কিংবা সুভ্যেনির শপ, যেখান সামুদ্রিক কাঁচামাল দিয়ে বানানো সুভ্যেনির সংগ্রহ করে নিতে পারেন পর্যটকেরা। এছাড়া অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় পর্যটকদের জন্য আছে সমুদ্রের পান্নার মতো সবুজ পানিতে স্নোরকেলিং কিংবা ডাইভিং-এর সুযোগ।
বারোস আইল্যান্ডে স্নোরকেলিং করার সুবর্ণ সুযোগ হাতছাড়া করতে চায় এমন পর্যটকের দেখা মিলা ভার। স্বচ্ছ পরিষ্কার পানির গভীরে সামুদ্রিক প্রাণীকুলের জীবন, কোরাল, মাছেদের চলাফেরা ও সৌন্দর্য দেখার জন্য স্নোরকেলিং ভালোবাসেন সৌন্দর্যপ্রেমীরা। বারোস দ্বীপে এমনকি যাদের পানিভীতি আছে তাদের জন্যেও প্রাথমিক ডাইভ কোর্সের ব্যবস্থা আছে। আগে থেকেই ডাইভিং জানেন এমন পর্যটকেরা সুযোগ পান আইল্যান্ডের লেগুনে ডাইভ করার অভিজ্ঞতা অর্জনের। ছোট এই দ্বীপটিতে রয়েছে বিভিন্ন ধরনের ওয়াটার স্পোর্টসের ব্যবস্থা; ওয়াটার স্কাইং, ওয়াটার বোর্ডিং, উইন্ড সার্ফিং এবং ক্যানোইং। এর যেকোনো সুযোগই লুফে নেন অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় পর্যটকেরা। পর্যটকদের সময় কাটানোর জন্য সাথে নতুন অভিজ্ঞতা অর্জনের জন্য পছন্দের তালিকায় থাকে অ্যাডভেঞ্চারে পরিপূর্ণ রাইডগুলো।
Ithaa undersea restaurant
মালদ্বীপের রাংগালি দ্বীপের একটি হোটেলের কর্তৃপক্ষ সমুদ্রের ৬ মিটার গভীরে স্বচ্ছ গ্লাস দিয়ে একটি রেস্তোরাঁ নির্মাণ করেছে। এ রেস্তোরাঁয় একসঙ্গে মোট ১২ জন অতিথি বসতে পারেন। এ রেস্তোরাঁয় শুধু লাঞ্চ ও ডিনার পরিবেশন করা হয়। রেস্তোরাঁর নাম ‘ithaa undersea restaurant’। স্থানীয় ভাষায় ‘ইথা’ অর্থ মুক্তা। রেস্তোরাঁর দেয়াল গ্লাস দিয়ে তৈরি। এটি সমুদ্রের গভীরে গ্লাস দিয়ে নির্মিত একমাত্র রেস্তোরাঁ। এটি নির্মাণ করতে খরচ হয়েছে ৫০ লাখ মার্কিন ডলার। রেস্তোরাঁয় মোট ৬ টেবিল আছে। প্রতিটি টেবিলে মাত্র ২ জন অতিথি বসতে পারেন। অতিথিরা সুস্বাদু খাবার খাওয়ার সঙ্গে সঙ্গে সমুদ্রের নীচের মনোরম দৃশ্য দেখতে পারেন। নানা ধরনের রঙিন মাছ তাদের চোখের সামনে ঘুরে বেড়ায়। সে এক মজার অভিজ্ঞতা। তবে, এত সুন্দর পরিবেশে খাবার খাওয়ার মূল্যও কিন্তু বেশি। এখানে সবচে সস্তা লাঞ্চের জন্য আপনাকে গুনতে হবে ২০০ মার্কিন ডলার।
ভাদহু দ্বীপ
সূর্য অস্ত যাওয়ার পরেই ভাদহু দ্বীপের সৈকত জ্বলজ্বলে হয়ে ওঠে। আর অসাধারণ সে দৃশ্য দেখে চোখ জুড়ায় যে কোনো ব্যক্তির। ভাদহু দ্বীপের আরও বেশ কিছু দর্শনীয় স্থান রয়েছে। তবে পর্যটকদের কাছে এর সমুদ্র সৈকতই সবচেয়ে জনপ্রিয়। সূর্য ডোবার সঙ্গে সঙ্গে ঢেউয়ের তালে তালে জ্বলজ্বল করতে থাকে এ দ্বীপের বালুময় সমুদ্র সৈকত। সমুদ্রের অগভীর পানি থেকে যেন বিচ্ছুরিত হতে থাকে অদ্ভুত আলো। কিন্তু কেন সে দ্বীপের সৈকত এভাবে জ্বলজ্বল করে? এ প্রসঙ্গে গবেষকরা জানাচ্ছেন, ফাইটোপ্লাংকটন নামে ক্ষুদ্র একধরনের প্রাণী তৈরি করে এ আলো। এটি অন্ধকারে জ্বলজ্বল করে। আর তা দেখে মোহিত হয় মানুষ। ভাদহু দ্বীপটি মালে ইন্টারন্যাশনাল এয়ারপোর্ট থেকে আট কিলোমিটার দূরে। পর্যটকরা তাই খুব সহজেই এ দ্বীপটিতে ভ্রমণ করতে পারেন।
জ্বলজ্বলে বিচ
মালদ্বীপের দর্শনীয় স্থানের মধ্যে এ জ্বলজ্বলে বিচ বিখ্যাত। এটি ভাদহু দ্বীপের একটি বিচ। মালদ্বীপে ভ্রমণ করতে গেলে ভাদহু দ্বীপের এ স্থানটি অবশ্যই ঘুরে দেখা উচিত।
লোকাল আইল্যান্ডঃ
অনেকে মনে করে মালদ্বীপের সৌন্দর্য একমাত্র রিসোর্ট নির্ভর। কিন্তু কথাটি একেবারেই সত্যি না। বরং মালদ্বীপ ভ্রমণের সবথেকে ভালো সময় উপভোগ করবেন লোকাল আইল্যান্ড গুলোতে। সুন্দর নীল পানি এবং প্রাকৃতিক সৌন্দর্যের অপরূপ পরিবেশ লোকাল আইল্যান্ড গুলো। Per night 10000- 15000 এর মধ্যে ভালো হোটেল পাওয়া যায়।
হলুমালে দ্বীপঃ
হলুমালে দ্বীপ, মালদ্বীপের আরেকটি অন্যতম সুন্দর দ্বীপ। মালদ্বীপ এয়ারপোর্ট থেকে একদম কাছাকাছি এ দ্বীপ শহরটি। হলুমালে দ্বীপ থেকে অন্য যেকোনো দ্বীপে যাওয়া সহজ। এ দ্বীপে গেলে আপনার মনে হবে সাগরকন্যা মালদ্বীপ আপনাকে দু’হাত বাড়িয়ে ডাকছে তার অপার সৌন্দর্য্য উপভোগ করার জন্য। বিশাল জলরাশি, সমুদ্রের গর্জন, নির্মল বায়ুপ্রবাহ পর্যটকদের অশান্ত মনকে শান্ত করে দেয়। আপনি যদি “বীচ প্যালেস” হোটেলে থাকেন তবে সমুদ্র সৈকত দারুণভাবে উপভোগ করতে পারবেন।
আর যদি সাগরের নিচে স্কুবা ডাইভিং করতে চান তাহলে আপনি হলুমালে বিচ প্যালেস থেকে ৫-৭ মিনিট হাঁটলেই একটি ডাইভিং ক্লাব পেয়ে যাবেন।
বান্দোস আইল্যান্ড রিসোর্টঃ
বান্দোস আইল্যান্ড রিসোর্ট, হলুমালে থেকে বান্দোস আইল্যান্ডে যেতে স্পিডবোটে সময় লাগে প্রায় ৪০ মিনিট। স্নরকেলিং,ডীপ সি ডাইভিং, সার্ফিং ইত্যাদি এক্টিভিটির জন্য এ দ্বীপ জনপ্রিয়।
কমো কোকোয়া দ্বীপপুঞ্জঃ
পাম্পারিং বিলাসিতা এবং আন্ডারটেটেড কমনীয়তার ঠিক সঠিক সংমিশ্রণে, সিএমও কোকো দ্বীপটি দক্ষিণ মালার প্রবাল প্রবালভূমিতে অবস্থিত, রাজধানী থেকে কেবল ৪০ মিনিট সময় লাগে স্পিডবোটে চড়ে যেতে হয়। কোমো কোকো দ্বীপে শান্তি ও প্রশান্তির রাজত্ব: প্রতি সন্ধ্যায় জেন-জাতীয় প্যাভিলিয়নে যোগব্যায়াম দেওয়া হয় এবং উচ্চ প্রশংসিত শম্ভলা রিট্রিট বিস্তৃত ম্যাসেজ এবং চিকিত্সার প্রস্তাব দেয়। স্নোরকেলিং এবং ডাইভিং প্রায় আপনার দ্বারপ্রান্তে রয়েছে কারণ এই অ্যাটলেলের জলের পরিমাণ এতটাই নিম্নমানের। নির্বাহী শেফ ন্যান্টানিত জুলজোরহোর সাথে তালগাছানাযুক্ত রেস্তোরাঁগুলি শীর্ষ-শ্রেণীর খাবার সরবরাহ করে, এশীয় প্রভাবগুলি বহন করার জন্য সারগ্রাহী পরিবেশনার ব্যবস্থা করে। স্ট্রেস-আউট শহর আত্মার জন্য একটি আইডিলিক রিট্রিট।
প্যারাডাইস আইল্যান্ড:
প্যারাডাইস আইল্যান্ড নামের দ্বীপটির চারপাশে একতলা বিচ বাংলো দিয়ে সাজানো, এর ভেতরে আছে রিসেপশন অফিস, কনফারেন্স হল, রেস্টুরেন্ট, সুইমিংপুল, ফুটবল মাঠ, ফটোশন, ফিটনেস ক্লাব, চিলড্রেন পার্ক, স্পা, সুভেনির শপ, সেলুন ইত্যাদি। এছাড়া অ্যাডভেঞ্চারপ্রিয় পর্যটকদের জন্য আছে অনেকটা সমুদ্রের পানির উপরে তৈরি করা ওয়ার ভিলা, হেভেন ভিলা, হেভেন স্যুট, ওশেন স্যুট। রিসোর্ট ভাড়ার সঙ্গে ব্রেকফার্স্ট ও ডিনার কমপ্লিমেটারি থাকে।
সকালের চিকচিকে রোদে হুলহাঙ্গু বারের সামনে পেতে রাখা কাঠের বেঞ্চে বসে সামুদ্রিক খাবার খাওয়া, বাগিচা রেস্তোরাঁয় লাঞ্চ করে ওপাশের সবুজ ঘাসের বিছানায় বসে বসে ক্লান্তি দূর করা, মাথার উপর প্রাচীন কোনও গাছ থেকে নেমে আসা ম্যাকাও পাখির সাথে কথোপকথন, সন্ধ্যে নামার আগে বিষণ্ণ ভালো লাগায় বালুকাবেলায় খালি পায়ে হেঁটে যাওয়া, রাতের বেলায় তীরে এসে আছড়ে পড়া স্ট্রিং রে মাছের সাথে উৎসব, আরও বেশি রাত বেড়ে গেলে শুধুই প্রকৃতির সাথে মিলেমিশে একাকার, কোনও কোলাহল নাই, নির্জনতা বলতে যা বোঝায় প্যারাডাইস আইল্যান্ডে কেবল তাই।
মালদ্বীপে কখন যাবেনঃ
মা লদ্বীপ যাওয়ার কোনও নির্দিষ্ট সময় থাকে না। সারা বছরই এখানে সিজন। ডিসেম্বর – জানুয়ারি থেকে শুরু করে মে-জুন।। মালদ্বীপে সারা বছরই গরম এবং রোদ থাকে, যার গড় তাপমাত্রা 23ºC-31ºC থাকে। সেরা আবহাওয়া এবং মালদ্বীপ ভ্রমণের সেরা সময় হল নভেম্বর এবং এপ্রিলের মধ্যে। উচ্চ মৌসুম ডিসেম্বর এবং মার্চ মধ্যে পড়ে। বর্ষা মে থেকে অক্টোবর পর্যন্ত চলে, প্রায় জুনের উঁচুতে। উত্তর অ্যাটলসে মে-নভেম্বর মাসে সর্বাধিক বৃষ্টিপাত হয়; নভেম্বর-মার্চ থেকে দক্ষিণ অ্যাটলস।
কিভাবে যাবেনঃ
মালদ্বীপে যাওয়ার জন্য ঢাকা থেকে মালদ্বীপের সরাসরি ২-৩ টি ফ্লাইট আছে। তবে বাংলাদেশিরা মালদ্বীপিয়ান এয়ার ও শ্রীলঙ্কান এয়ার লাইন্সে বেশি যাতায়াত করে।। ঢাকার আন্তর্জাতিক বিমানবন্দর থেকে সরাসরি মালদ্বীপের মালে ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে যাওয়া যায়।।।
আবার চাইলে বাংলাদেশ থেকে প্রথমে শ্রীলঙ্কার বান্দারনায়াকে আন্তর্জাতিক এয়ারপোর্ট থেকে ট্রানজিট সেশন শেষ করে অন্য ফ্লাইটে মালদ্বীপের মালে ইন্টারন্যাশনাল বিমানবন্দরে যাওয়া যায়। শ্রীলঙ্কা থেকে বিমানে মালদ্বীপ যেতে ১ ঘণ্টা সময় লাগে। এইক্ষেত্রে খরচ কম হয় আর একসাথে দুই দেশ ঘুরা হয়।
কোথায় থাকবেনঃ
মালদ্বীপে যত বিলাসবহুল রিসোর্ট আছে তার মধ্যে ফান আয়ল্যান্ড রিসোর্ট, প্যারাডাইস আয়ল্যান্ড রিসোর্ট এন্ড স্পা, সান আয়ল্যান্ড রিসোর্ট, মালাহিনিকুদা এই রিসোর্টগুলো সবচেয়ে কম খরচের মধ্যে হতে পারে।
মালে শহরের খানিক দূরে বেশ কয়েকটি দ্বীপ রয়েছে। দ্বীপগুলোর নাম হচ্ছে মাফুশি, হিমাফুশি, ধিফুশি, গুলহি, হুরা ইত্যাদি। এই দ্বীপগুলিতে স্পিড বোটে পৌঁচ্ছে যাওয়া যায়। এখানেও রিসোর্ট মিলবে বেশ সস্তায়।
খরচঃ
মালদ্বীপে থাকা খাওয়ার খরচ বেশি।। বিমানে ঢাকা থেকে মালদ্বীপের যাওয়া আসা ৪৫০০০-৬০০০০ টাকা খরচ হবে। বিমান ভাড়া নির্ভর করবে কতো আগে টিকেট কাটবেন তার উপর।। শহরের মধ্যে থাকলে খরচ কম হবে আইল্যান্ডের কাছাকাছি রিসোর্টে থাকলে খরচ দ্বিগুণ বেড়ে যাবে।। সাধারন মানের খাবার খেয়ে থাকলে প্রতি বেলা ৪০০-৫০০ এর মধ্যে হয়ে যাবে।। সব মিলিয়ে কম খরচে বিমানে যাতয়াত সহ ৩ রাত ২ দিন থাকলে ১,০০,০০০ – ১,৩০,০০০ এর মতো খরচ হতে পারে।। কম খরচে বেড়াতে হলে যত সম্ভব আগে সস্তায় টিকেট কাটতে হবে।। থাকার জন্য লোকাল রিসোর্ট বা গেস্ট হাউজে থাকতে হবে।। এবং যাতায়াতের জন্য সরকারী ফেরি ব্যবহার করতে হবে।।
ভ্রমণের জন্য পর্যটকদের কাছে মালদ্বীপ একটি আকর্ষণীয় স্থান। সমুদ্রবিলাসের জন্য ও নিরিবিলি সময় কাটানোর জন্য এখানে সমস্তরকম আয়োজন রয়েছে। খন্ড খন্ড সাদা মেঘের উপর থেকে দেখছেন, আপনার বিমানটি বিশাল সমুদ্রের উম্মত্ত জলরাশির উপর অবতরণ করছে। চারদিকে কিছু নেই শুধু থৈথৈ নীলচে রঙের পানি আর পানি। ঢেউ আর ঢেউ। মনে হবে বিমানটি পানির তলদেশে তলিয়ে যাবে। কিন্তু না। আপনি ভয়ে যখন হতবিহ্ববল তখন পানির উপর ভাসমান এয়ারপোর্টটি আপনার নজরে আসবে, ক্ষনিক আগের আতঙ্ক পরিণত হবে আকর্ষণে। এরপরই আপনার মনে প্রশ্ন জাগবে। এই হিংস্র উদ্দাম ঊরনচন্ডী জলদেবীর উপর কিভাবে এয়ারপোর্ট টি স্বমহিমায় ভেসে আছে? মুগ্ধতার শুরু এখানেই হয়, শেষ হতে হতে আসলেই শেষ হয় না। অথচ সতর্ক করে দিচ্ছে অনেকেই যে, সমুদ্রের উচ্চতা সমুদ্রের মাত্রাটি মালদ্বীপের দ্বীপ রাষ্ট্রকে ডুবিয়ে দিতে পারে। ডুবে যাবার আগে একবার ঘুরে আসতে পারেন এই স্বর্গ থেকে।
বি: দ্র : ঘুরতে গিয়ে দয়া করে পরিবেশ নষ্ট করবেন না,চিপস এর প্যাকেট, পানির বোতল এবং অপচনশীল দ্রব্য নির্ধারিত স্হানে ফেলুন।। এই পৃথিবী, আমার, আপনার সুতরাং নিজের দেশ এবং পৃথিবীকে সুন্দর রাখা এবং রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্বও আমার এবং আপনার হ্যাপি_ট্রাভেলিং
ভ্রমণ বিষয়ক তথ্য পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেইসবুক গ্রুপ এবং ফলো করুন আমাদের পেইজ
Comment (0)