থাইল্যান্ড ভ্রমণ-
থাইল্যান্ড (Thailand) দেশটি পর্যটকদের প্রচুর আকর্ষণ করার একটি অন্যতম কারণ হল, খুব কম খরচেই আপনি থাইল্যান্ড থেকে ঘুরে আসতে পারেন। সমুদ্র-সৈকত, নয়নাভিরাম পাহাড়ের সৌন্দর্য, গাছ-গাছালিসহ প্রাণী জগতের ছোঁয়ার সাথে পেয়ে যাবেন অত্যাধুনিক শহর। এই চমৎকার দেশ থাইল্যান্ড ঘুরতে যাওয়ার আগে যে কয়টি দর্শনীয় স্থান আপনার লিস্টে টুকে রাখতে হবে, তেমনই কিছু পর্যটন এলাকা নিয়ে আমরা আজ আপনাদের জানাবো। পুরো থাইল্যান্ড জুড়েই দর্শনীয় স্থানের কোনও অভাব নেই আর তার সাথে রয়েছে দেশি-বিদেশি নানা রকমের ও নানান ধরনের খাবার রেস্টুরেন্ট। এছাড়া এখানকার ব্যাংকক শহরের স্ট্রিট ফুড বিখ্যাত। চিংড়ি, চিকেন, হাঁস, বিফসহ বিভিন্ন ধরনের সামুদ্রিক মাছের সমাহার থাকে এখানকার বিভিন্ন রেস্তোরাঁয়।
থাইল্যান্ড এর দর্শনীয় স্থানঃ
ব্যাংককঃ
পৃথিবীর ব্যস্ততম শহরগুলোর একটি ব্যাংকক। ব্যাংকক নিয়ে বলতে গেলে প্রথমেই বলতে হয় এই শহরের ব্যস্ততার কথা। নানা কাজে নানা মানুষ ঘুরে চলছেন এই শহরজুড়ে, একটু খানি অবসরও যেন নেই কারো কিছু দেখার জন্য না হোক খাবারের জন্য হলেও জীবনে একবার আপনার ব্যাংকক যাওয়া উচিত। তবে এই ব্যাংককে বেশকিছু দর্শনীয় স্থান থাকলেও কেবল মাত্র যদি এই শহরের খাবারের জন্যই আপনি সেখানে যান তবে কথা দিচ্ছি আপনাকে হতাশ হতে হবে না।বিলাসবহুল অনেক খাবারের রেস্তোরাঁ থাকলেও পর্যটকদের মূলত এখানের স্ট্রিট ফুড একটু বেশিই আকর্ষণ করে থাকে…. অসংখ্য সাংস্কৃতিক এবং ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থান রয়েছে এই শহরে। আকাশচুম্বী আধুনিক স্থাপত্য, দৃষ্টিনন্দন আর্ট গ্যালারি ও জাদুঘর তো থাকছেই। গতানুগতিক মেগামল ছাড়াও এখানে রয়েছে, ঐতিহ্যবাহী ভাসমান বাজার। খাবারের ব্যবস্থাতেও রয়েছে ব্যাপক বৈচিত্র্য। বিলাসবহুল গুরমেট রেস্তোরাঁর পাশাপাশি চেখে দেখতে পারেন স্ট্রিট ফুড। তবে ভয় নেই, অসতর্কতার সাথে তারা খাবার তৈরি করেন না। দিনের সাথে পাল্লা দিয়ে আপনাকে বিনোদনের সুযোগ করে দেবে রাতের ব্যাংকক। নাইট ক্লাব, লাইভ মিউজিক, ককটেইল বার, রুফটপ বার, মুয়া থাই ফাইটস নামের রেস্টলিং ক্লাবসহ আরো নানা কিছু তো রয়েছে।শহরের পরিবহন ব্যবস্থাও চমৎকার – বিটিএস স্কাই ট্রেন, এমআরটি পাতাল ট্রেন, অসংখ্য বাস, ট্যাক্সি। যে কোন ধরনের বাজেটেই আপনি থাকার সুব্যবস্থা পেয়ে যাবেন ব্যাংককে। পর্যটন ব্যবস্থার জন্য যে সব শহরের খ্যাতি পুরো বিশ্বজুড়ে, সেগুলোর মধ্যে ব্যাংকক শহরটি বেশ অন্যতম। পর্যটকরা প্রতিনিয়তই থাইল্যান্ডের রাজধানী ব্যাংককে তাদের অবকাশ জ্ঞাপন করতে দূর-দূরান্ত থেকে ছুটে আসেন। রাত-দিন চব্বিশ ঘণ্টা এই শহর ঘিরে থাকে উৎসবের আমেজ, কেননা এখানে বেশ কিছু ঐতিহাসিক দর্শনীয় স্থানের পাশাপাশি রয়েছে নাইট ক্লাব, বার ও লাইভ মিউজিকের সমাহার।
এছাড়া যদি শহরটির পরিবহন ব্যবস্থার কথাও বলতে হয় তখনও এখানকার চমৎকার ব্যবস্থা আপনাকে হতাশ করবে না। ব্যাংকক শহরটিতে প্রতিবছর লাখ লাখ পর্যটক আসতে থাকার কারণে এখানে রয়েছে বিভিন্ন বাজেটের অসংখ্য থাকার ব্যবস্থা
ফুকেটঃ
থাইল্যান্ড জুড়ে যে চমৎকার পর্যটন ব্যবস্থাটি কার্যকর রয়েছে তার অন্যতম প্রধান একটি আকর্ষণ হচ্ছে ফুকেট দ্বীপটি। একইসাথে বিভিন্ন আমেজের জন্য এই দ্বীপটি বেশ বিখ্যাত, কেননা শুধুমাত্র ফূর্তি করতে চাইলেও ফুকেট জায়গাটি আপনাকে এক রঙিন জীবনের সন্ধান দেবে। থাইল্যান্ডের বৃহত্তম দ্বীপ এবং অন্যতম জনপ্রিয় পর্যটন কেন্দ্র ফুকেট। কথিত আছে ফুকেট একটি বহুরূপী দ্বীপ। কেউ কেউ এখানে আসেন শুধু ফুর্তিবাজদের সাথে রাতের আনন্দে গা ভাসিয়ে দিতে। কেউ কেউ আসেন ওয়াটার স্পোর্টসের মজা নিতে।
কিন্তু সত্যি বলতে গেলে যে কোনো রুচির মানুষের জন্যই এখানে ভিন্ন ভিন্ন সমুদ্র সৈকত রয়েছে। ফ্রিডম বিচ, কাঠু বিচ, কেরন বিচ থেকে বেছে নিতে পারবেন আপনারটি। সূর্যাস্ত দেখার জন্য যেতে পারেন প্রমথেপ কেইপ। বিশ্বমানের রেস্টলিং দেখতে পারেন মুয়া থাই ফাইট ক্লাবে। পৃথিবীর প্রায় সব ধরনের রেস্তোরাঁ, বার, ক্লাবের দেখা মিলবে ফুকেটে।
হাইকিং থেকে মাছ ধরা ও জেট স্কিং কি নেই এই ফুকেটে! এই সমুদ্র-হাইকিং, গো কার্টিং, হাতির সাথে সন্ধি, মাছ ধরা, স্নোরকেলিং, জেট স্কিং ছাড়াও রয়েছে আরও অনেক মজার মজার ব্যাপার। সৈকতজুড়ে সবসময় বিরাজ করছে এক অন্য আমেজ। এছাড়া এখানকার মুয়া ফাইটক্লাবে আপনি একদম লাইভ রেস্লিং দেখতে পাবেন, যেটা আপনাকে সত্যিই অবাক করে তুলবে।মনুষ্যসৃষ্ট দর্শনীয় স্থানের মধ্যে আছে ওয়াট চ্যালং ও বিগ বুড্ডা। সমুদ্র সৈকতে বুদ হয়ে শহরটা ঘুরে দেখতে ভুলে যাবেন না যেন। এখানে দেখতে পাবেন চমৎকার সব পুরনো স্থাপনা। হাস্যকর সব ছবি তোলার জন্য যেতে পারেন বান টিলাঙ্কা ও ফুকেট ট্রিকআই মিউজিয়াম।
অপরদিকে ভ্রমণ ও পানির সাথে যদি আপনার যৌথ সখ্য থাকে তাহলে এখানকার বিভিন্ন ওয়াটার স্পোর্টস ও সমুদ্র-সৈকত আপনার জন্য যথেষ্ট পরিমাণে আয়োজন করে রেখেছে। এখানকার প্রমথেপ কেইপ জায়গাটি সূর্যাস্ত দেখার জন্য বেশ বিখ্যাত।তবে কেবলমাত্র সমুদ্রের সাথেই সন্ধি করে নিলেই হবে না আপনাকে এই ফুকেট শহরটির চমৎকার সব স্থাপনাগুলোও ঘুরে দেখতে হবে।
পাতায়াঃ
ব্যাংকক থেকে প্রায় দেড়শ’ কিলোমিটার দূরে অবস্থিত একটি শহর পাতায়া। এই শহরের পাতায়া সমুদ্র সৈকতটি পর্যটকদের কাছে অনেক বিখ্যাত। সমুদ্রের হাতছানি আর রঙিন রাতের স্পর্শ আপনার ভ্রমণে নিয়ে আসবে অন্য রকমের আমেজ। প্রতিবছর প্রায় লক্ষাধিক পর্যটককে আকর্ষণ করে এই পাতায়া শহরটি। কেননা এই শহরে রয়েছে বিনোদনের সবরকম আয়োজন।।
থাইল্যান্ড গেলে কিছু জায়গা যেগুলোর কথা মনে করিয়ে দিতে হয় না তার মধ্যে পাতায়া অন্যতম। পাতায় অবশ্য হানিমুনের জন্যেও বিখ্যাত। তবে নারী সান্নিধ্য ও মদ্যপানের এভেইলেবিলিটী থাকায় এই জায়গা কে অনেকে পাপের শহর বলে থাকেন। তাই অনেকেই এখানে প্রাপ্ত বয়স্ক ছাড়া ভ্রমণে নিষেধ করে থাকেন। তবে এসবের পাশাপাশিও আছে দেখার মতো বেশ কিছু জায়গা। দন্যান্য সী বীচ গুলোর মতো অতো সুন্দর না হলেও পাতায়ার সূর্যাস্ত আপনার মন কেড়ে নেবে। স্নোরকেলিং এর জন্য কাছেই আছে ভিন্ন এক সী বীচ। কাঠের তৈরি ‘’ স্যাংকচুয়ান অফ দ্য ট্রুথ “ মূর্তি গুলো বেশ আকর্ষণীয়। এখানে আসলে অবশ্য নুচ বোটানিক্যাল গার্ডেন দেখতে ভুলবেনন না। নানারকম মূর্তি, ফুলের বাগান ও ফোয়ারা সমৃদ্ধ এই জায়গা ভ্রমণ আপনাকে বিশেষভাবে অভিভূত করবে।
চিয়াং মাইঃ
উত্তর থাইল্যান্ডের রাজধানীও বলা হয়ে থাকে এই শহরটিকে। সংস্কৃতি এবং প্রকৃতির নেশাময় এক সংমিশ্রণ এই শহর। সংস্কৃতি নিয়ে যাদের আগ্রহ তাদের প্রথম পছন্দ হতে পারে চিয়াং মাই। কেননা এখানে আছে ৫০০ এর বেশি মন্দির। এই শহরজুড়ে আপনি এক চমৎকার সংস্কৃতি ও প্রকৃতির দ্বৈরথ খুঁজে পাবেন যেটা আপনি আর কোথায় নাও পেতে পারেন। কোন সংস্কৃতিকে পুরোপুরি উপভোগ করতে চাইলে এই শহরটি আপনাকে উপহার দিবে প্রায় পাঁচশটিরও বেশি মন্দির। এছাড়া চিয়াংমাইয়ের রাত্রিকালীন চিড়িয়াখানা আপনার ও আপনার শিশু উভয়ের জন্যই হয়ে উঠতে পারে এক চমৎকার বিনোদনকেন্দ্র। শিশুদের পাশাপাশি বড়দেরকেও মন্ত্রমুগ্ধ করে রাখবে চিয়াং মাই এর রাত্রিকালীন চিড়িয়াখানা।
এই শহরের রাতগুলো ব্যাংককের মত অতটা বর্ণচ্ছটায় রঙিন না হলেও আপনাকে একদম পুরোপুরি হতাশ করবে না। এখানে অসংখ্যবার ও বিভিন্ন মার্কেট আপনি প্রায় সবসময়ই খোলা পাবেন। থাইল্যান্ডের বিভিন্ন ঐতিহ্যবাহী জিনিষপত্র যদি আপনি কিনতে চান তাহলে এই শহরটি আপনাকে দেবে ঐতিহ্যের এক বিপুল সমাহার। রয়েছে সুদৃশ্য জঙ্গলের ভেতরে হাইকিং ও খরস্রোতা নদীতে র্যাফটিং করার সুযোগ। থাইল্যান্ডের সর্বোচ্চ পয়েন্ট ডোই ইথানান রয়েছে চিয়াং মাইতে। পাহাড়ি উপজাতি, অসংখ্য জলপ্রপাত, থাই হাতির অভয়ারণ্য সব মিলিয়ে অসাধারণ এক জায়গা চিয়াং মাই। ব্যাংককের তুলনায় চিয়াং মাই রাতের বেলা কিছুটা নিরিবিলি। তবে তার মানে এই না যে, আপনাকে হোটেলে বসে থাকতে হবে। রয়েছে অসংখ্য বার ও শপিং করার জন্য রাতের বাজার। যেখানে আপনি পাবেন, নানান ধরনের ঐতিহ্যবাহী থাই জিনিসপত্র।
ক্রাবিঃ
থাইল্যান্ডের দক্ষিণাঞ্চলের এই এলাকাটি পর্যটকদের কাছে বেশ জনপ্রিয়। ভূখণ্ড ও দ্বীপ উভয়ের ছোঁয়া আপনি এখানে পেয়ে যাবেন, যা আপনার ভ্রমণকে করে তুলবে খুবই উপভোগ্য। দক্ষিণ থাইল্যান্ডের সবচেয়ে জনপ্রিয় প্রদেশগুলোর মধ্যে একটি ক্রাবি। একসাথে থাইল্যান্ডের মূল ভূখণ্ড পাশাপাশি দ্বীপ ভ্রমণ করতে চাইলে ক্রাবি হওয়া উচিত আপনার প্রথম পছন্দ। থাইল্যান্ডের সবচেয়ে সুন্দর দ্বীপ বলে আখ্যায়িত করা হয় কোহ ফি ফি দ্বীপকে। কেন সবচেয়ে সুন্দর দ্বীপ বলা হয় সেটা বুঝতে আপনাকে যেতে হবে “মায়া বে” আর “ফি ফি ভিউ পয়েন্ট”। দীর্ঘ বালুকাময় সৈকত, বিচ বার, ম্যানগ্রোভ বন, মকন সম্প্রদায়ের (সি জিপসি) জন্য বিখ্যাত কোহ লান্টা। বিশাল সমুদ্র-সৈকত এর সাথে আপনি যদি প্রকৃতি প্রেমিক হয়ে থাকেন তাহলে এই অঞ্চলটি আপনাকে উপহার দিবে এক চমৎকার ম্যানগ্রোভ জঙ্গল।পশু প্রেমিকরা স্বেচ্ছাসেবী হিসেবে লান্টা এনিমেল ওয়েলফেয়ারে কাজ করে সময় কাঁটাতে পারেন। একটু নির্জন সময় কাঁটাতে চাইলে যেতে পারেন স্বল্প পরিচিত কোহ জুম ও কোহ রক দ্বীপে। মূল ভূখণ্ডে দেখার মত রয়েছে রেইলেই, আও নাং বিচ রিসোর্ট ও ক্রাবি টাউন। এছাড়া আপনি যদি কোলাহল থেকে একটু দূরে প্রকৃতি এবং নিজের সাথে একটু সময় কাটাতে চান তাহলে আপনি চলে যেতে পারেন এখানকার কোহ জুম ও কোহ রক নামক দু’টি দ্বীপে।
আয়ুথায়াঃ
ইতিহাস ভক্তদের জন্য রয়েছে ইউনেস্কো তালিকাভুক্ত থাইল্যান্ডের সবচেয়ে প্রাচীন শহর আয়ুথায়া। সব থেকে পুরনো শহর এটি এদেশের। এখানে গেলে দেখতে পারবেন সারি সারি বৌদ্ধ মন্দির। পুরাকীর্তির প্রতি আকর্ষণ যাদের বেশি তাদের জন্য এই জায়গা আবশ্যিক ভ্রমণের। ব্যাংককের কাছেই এটি।
ব্যাংকক থেকে আয়ুথায়া যাওয়া বেশ সহজ। এই শহরের প্রাচীন শৈল্পিক ধ্বংসাবশেষের দৃশ্য আপনাকে নিয়ে যাবে সায়ামের স্বর্ণযুগে। স্যাফ্রন চাদর পরিহিত সারি সারি বৌদ্ধ মূর্তিতে ঘেরা ওয়াট ইয়া চাই মংকার্ন এই শহরের সবচেয়ে ফটোজেনিক স্থান। আপনি চাইলে এর ছোট ছোট গম্বুজ গুলোতে বেয়ে উঠতে পারবেন। গাছের শেকড়ে আবৃত বৌদ্ধ মূর্তির মাথা সম্বলিত ওয়াট মাহাতাত মন্দির বেশ জনপ্রিয়। আরও আছে ওয়াট রাটচাবুরানা, ওয়াট সি সামফেট। সময় করে পুরাতন ডাচ এবং পর্তুগিজ এলাকা ঘুরে দেখতে পারেন। হালকা কেনাকাটা করতে যেতে পারেন ভাসমান বাজারে। আয়ুথায়া ভ্রমণের জন্য সাইকেল কিংবা চালাতে জানলে স্কুটার ভাড়া করে নেয়া সবচেয়ে বুদ্ধিমানের কাজ।
কোহ ফাঙ্গানঃ
পূর্ণিমার রাতে নাচ-গান ফুর্তি ও পার্টি করার জন্য জনপ্রিয় কোহ ফাঙ্গান। অন্যদিকে প্রাকৃতিক আকর্ষণ তো রয়েছেই। পার্টি করার জন্য “হাদ রিন” জায়গাটা সবচেয়ে জনপ্রিয়। যদি প্রকৃতি প্রেমী হন তাহলে ভিড় থেকে একটু দূরে গেলেই খুঁজে পাবেন শান্ত সৈকত, পুরাতন জলপ্রপাত, শ্যামল বন। স্বল্প খরচে সুস্বাদু খাবারে পেট ভরতে যেতে পারেন রাত্রিকালীন বাজার গুলোতে। রান্না শিখতে চাইলে ঢুকে যেতে পারেন কোন রান্নার স্কুলে। মেডিটেশন ও ইয়োগা সেন্টারে কিছু সময় ব্যয় করে খুঁজে নিতে পারেন আপনার হারিয়ে যাওয়া মানসিক প্রশান্তি।
ফি-ফি দ্বীপপুঞ্জঃ
ফি ফি আইল্যান্ড – স্ক্যুবা ডাইভিং এবং স্নোর্কেলিং গন্তব্যস্থলের জন্য জনপ্রিয় থাইল্যান্ড এর ফি-ফি দ্বীপপুঞ্জ, ফুকেতের দ্বীপ এবং মলাক্কার পশ্চিম প্রণালীর মাঝখানে অবস্থিত। এই সমষ্টিগত দ্বীপপুঞ্জের সবচেয়ে বৃহত্তম দ্বীপটি কোহ ফি-ফি ডন হিসাবে পরিচিত। ফি-ফি দ্বীপপুঞ্জগুলি তাদের নান্দনিক বা শিল্পরুচিসম্মত সৌন্দর্যের জন্য অতি পরিচিত এবং প্রতি বছর বিশাল সংখ্যক পর্যটকদের দ্বারা এটি পরিদর্শিত হয়। জাতীয় উদ্যানের মর্যাদা দ্বারা দ্বীপটির সমুদ্র-সৈকত এবং স্বচ্ছ জলোচ্ছাস সংরক্ষিত হয়।বর্তমানে সামুদ্রিক বিনোদনমূলক কার্যক্রম যেমন স্নরকেলিং এবং স্ক্যুবা ডাইভিং-এর জন্য কোহ ফি-ফি।
মায় হংসনঃ
পাহাড়ে আবৃত কিছুটা দূরবর্তী মায় হংসন প্রদেশদের অবস্থান উত্তর থাইল্যান্ডে। এই এলাকায় পর্যটকের আনাগোনা কম। প্রদেশের শহর অঞ্চলে কিছু বিদেশি পর্যটকের দেখা মিলতে পারে। মিয়ানমারের সীমান্ত ঘেঁষে অবস্থান হওয়ায় এই প্রদেশে শান জাতির মানুষের আধিক্য রয়েছে। সুন্দর প্রকৃতি এবং স্থাপত্য উপভোগের জন্য যেতে পারেন আপনি এই প্রদেশে। যারা প্রকৃতির প্রশান্ত পরিবেশ ভালবাসেন তাদের যেতে হবে এই প্রদেশের পাই নামক স্থানে। পাই কে ডাকা হয় ভবঘুরেদের স্বর্গ নামে। এই অঞ্চলের আকর্ষণের মধ্যে রয়েছে পাই ক্যানিয়ন, জলপ্রপাত, হাইকিং, নদীতে নৌকা ভ্রমণ ইত্যাদি।।
কাঞ্চনা বুরিঃ
কাঞ্চনা বুরি অবস্থিত থাইল্যান্ডের পশ্চিমে। থাইল্যান্ডের যুদ্ধ নিয়ে ঐতিহাসিক সুন্দর এই জায়গা টি। এখানে আছে কুয়াই নদী। যার উপর দাঁড়িয়ে এখানের সৌন্দর্য উপভোগ করতে আসেন হাজার হাজার পর্যটক। এখানে আছে ডেথ রেলওয়ে। এই রেলওয়ে নির্মাণের পেছনে যে সুদীর্ঘ রহস্যময় ইতিহাস লুকিয়ে আছে তা জানতেই আপনাকে ভ্রমণ করতে হবে এখানে। প্রা থাট নামের একটি গুহা এখানে পাবেন। এই গুহা কে শান্তির স্থান বলে আখ্যায়িত করা হয়। জনমানব থেকে দূরে এসে মেই খামিন নামক একটি জলপ্রপাত উপভোগ করতে পারেন এখানে। যুদ্ধকালীন কবরস্থান পাবেন এখানে। বিশাল বিশাল মন্দির আর ন্যাশনাল পার্কের সমারোহ এই জায়গায়। থাইল্যান্ডের ভেতরেই এ যেন এক ভিন্ন জায়গা।
যেভাবে যাবেনঃ
থাইল্যান্ড মূলত পর্যটক দিয়ে ঘেরা। আর তাই থাইল্যান্ড ঘুরতে যেতে হলে ভিসা প্রসেসিং নিয়ে খুব একটা জটিলতায় ভুগতে হবে না আপনাকে। ভিসার আবেদন জমা দেওয়ার জন্য আপনাকে যেতে হবে রাজধানীর গুলশানে অবস্থিত স্টার সেন্টারের দ্বিতীয় তলায়। উল্লেখ্য যে ভিসা আবেদন জমা দেওয়ার জন্য জনপ্রতি চার হাজার টাকা গুণতে হবে আপনাকে।একটি ব্যাপার সবসময় মনে রাখবেন আর সেটা হল, কোথাও ঘুরতে যাওয়ার সময় সেখানে অগ্রিম হোটেল বুকিং করে গেলে অনেক ধরনের জটিলতা থেকেই বেঁচে যাওয়া যায়। কেননা, এয়ারপোর্ট থেকে বের হয়েই আপনি ট্যাক্সি করে চলে যেতে পারেন আপনার নির্দিষ্ট হোটেলে। ইন্টারনেট চালানো যায় এমন একটি স্মার্ট-ফোন ও গুগল ম্যাপ এখানে আপনাকে বিভিন্ন জায়গায় ঘুরে বেড়াতে অনেক সাহায্য করবে। তবে হোটেল অগ্রিম বুকিং করা না থাকলেও আপনি ব্যাংককে হাতের নাগালের মধ্যেই অনেকগুলো টুরিস্ট হোটেল খুঁজে পাবেন।
বি: দ্রঃ ঘুরতে গিয়ে দয়া করে পরিবেশ নষ্ট করবেন না,চিপস এর প্যাকেট, পানির বোতল এবং অপচনশীল দ্রব্য নির্ধারিত স্হানে ফেলুন।। এই পৃথিবী, আমার, আপনার সুতরাং নিজেদের পৃথিবীকে সুন্দর রাখা এবং রক্ষনাবেক্ষনের দায়িত্বও আমাদের। হ্যাপি_ট্রাভেলিং।
ভ্রমণ বিষয়ক তথ্য পেতে জয়েন করুন আমাদের ফেইসবুক গ্রুপ এবং ফলো করুন আমাদের পেইজ
Comment (0)